সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত

বঙ্গবন্ধু থাকলে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলতেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু থাকলে পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলতেন

পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে ১৯৭১ সালের অপরাধের জন্য পাকিস্তানের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমার দাবি করতেন। গতকাল ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে সমাপনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র ও শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বপালন করা হুসেন হাক্কানি পাকিস্তানের চারজন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হাডসন ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণে হুসেন হাক্কানি বলেন, ১৪ বছর বয়সে করাচিতে প্রথম ও শেষবার বঙ্গবন্ধুকে দেখেছিলাম। ১৯৭০ সালে জাতীয় নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। করাচি ন্যাশনাল পার্কের জনসভায় পশ্চিম পাকিস্তান ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য ন্যায় প্রতিষ্ঠা, অধিকার, গণতন্ত্র ও নায্যতার দাবিতে বঙ্গবন্ধু সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমি নিশ্চিত, বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন, তিনি পাকিস্তানকে বাংলাদেশের ওপর ১৯৭১ সালে অত্যাচার চালানোর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলতেন। আমার মতো আরও অনেক পাকিস্তানিও এটা সমর্থন করে। আসলে যারা বিশ্বাস করে সমষ্টিগত ক্ষমাপ্রার্থনা কষ্ট মোচন করে এবং দুই দেশের মধ্যে ভুলে ভরা অতীতকে পেছনে ফেলে নতুন সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে, তারা সবাই এই দাবি সমর্থন করে। হাক্কানি বলেন, বঙ্গবন্ধু সহিংসতায় বিশ্বাস করতেন না। ১৯৭২ সালে দেশে ফেরত আসার পর ভারতের সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কও স্থাপন করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, এই বিচার করার মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধ যাতে ভবিষ্যতে সংঘটিত না হয় সে বিষয়ে অপরাধীদের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা বলা হয়। কিন্তু আমি বলব, তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা রাজনৈতিক নেতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মহান পিতার অসাধারণ কন্যা অভিহিত করে হাক্কানি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা এবং শেখ হাসিনার কর্মের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যার ভিতরে ও সীমান্তে কোনো সহিংসতা নেই। প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের শিক্ষার হার, মাথাপিছু আয় ও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের আগে বাংলাদেশ ভারতের অংশ ছিল এবং ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের অংশ। এ থেকে বোঝা যায় স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ কতটা এগিয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্য।

সর্বশেষ খবর