রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কানাডায় প্রবেশ করতে পারেননি মুরাদ

ইমিগ্রেশনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তুলে দেওয়া হয়েছে দুবাইগামী ফ্লাইটে

বিশেষ প্রতিনিধি

কানাডায় প্রবেশ করতে পারেননি মুরাদ

পদত্যাগের পর গোপনে দেশ ত্যাগ করা সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে কানাডায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাকে আরব আমিরাতের দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি দুবাই পৌঁছেছেন এবং ঢাকায় ফেরার টিকিট করেছেন; রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ তিনি ঢাকায় ফিরতে পারেন বলে বিমানের একটি সূত্র জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কানাডার নতুন দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও কানাডা প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক সওগাত আলী সাগর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি ও সেখানকার ইমিগ্রেশন পুলিশ বাংলাদেশি রাজনীতিক এবং সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানকে কানাডায় ঢুকতে দেয়নি। টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কানাডায় বসবাসরত ডা. মুরাদ হাসানের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র ঘটনার  সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে কানাডার সরকারি দফতর থেকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সওগাত আলী সাগর বলেন, “কানাডার নাগরিকরা যদি নিজেরা নিরাপত্তাহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেন, তাহলে তারা কানাডা সরকার তথা কানাডার বর্ডার সার্ভিস এজেন্সিকে অভিযোগ জানাতে পারেন। ‘মুরাদ হাসান কানাডায় আসতে পারেন’ এমন খবের কানাডার বিভিন্ন প্রদেশের কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিরা তার ছড়িয়ে পড়া অডিও, ভিডিও ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্যের রেকর্ড সরকারের কাছে পাঠায়। সরকার সেগুলো আমলে নিয়ে তাকে ফেরত পাঠায়।” মুরাদকে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে কানাডা সরকারের ভাষ্য না পাওয়ায় সওগাত আলী সাগর বলেন, ‘কানাডা সরকার সাধারণত ব্যক্তিবিশেষের জন্য কোনো বক্তব্য দেয় না। তাই এ বিষয়ে সরকারি কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।’ এদিকে শুক্রবার রাতে মুরাদ কানাডার মন্ট্রিলে এক আত্মীয়ের বাসায় পৌঁছান বলে কানাডার কুইবেক প্রভিন্স আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিটন মাসুদকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে লিটন মাসুদ তার ফেসবুক পেজে বলেন, ‘ডা. মুরাদের বিষয়ে আমি কারও কাছে কোনো ধরনের বক্তব্য দিইনি।’ ফলে মুরাদের কানাডা প্রবেশের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়নি। কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুন দেশ’-এ প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, ‘নারীর প্রতি অশোভন মন্তব্য করে বিতর্কিত সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ১১ ডিসেম্বর কানাডার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩১ মিনিটে টরন্টো পিয়ারসন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ওই সময় কানাডা ইমিগ্রেশন পুলিশ এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় ধরে ডা. মুরাদ হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ও তার বিভিন্ন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।’ এর আগে বিপুলসংখ্যক কানাডার নাগরিক (কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি) কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করে রাখেন। পরে তাকে মধ্যপ্রাচ্যগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ বিমানের একজন পাইলটের কাছ থেকে জেনে সিভিল এভিয়েশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, কানাডা থেকে ফেরত পাঠানোর পর মুরাদ দুবাই বিমানবন্দরে নামেন। সেখান থেকে বাংলাদেশে ফেরার জন্য টিকিট কেটেছেন। রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ তিনি বাংলাদেশে ফেরত আসতে পারেন। তবে সরকারের দায়িত্বশীল কারও কাছ থেকে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর