শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

স্ত্রী ও সন্তানকে গলা কেটে হত্যা স্বামী গ্রেফতার

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীতে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী। রবিবার দিবাগত রাতে শহরের ঘোড়াদিয়ার সঙ্গীতা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাষণ্ড স্বামী ফখরুল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন- রেশমি আক্তার (২৬) ও তার দেড় বছরের শিশুসন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমান সাফায়াত। নিহত রেশমি পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে। গ্রেফতার ফখরুল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছিলেন। এ ঘটনায় গতকাল বিকালে নিহত রেশমির পিতা পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে ফখরুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, ২ বছর ৬ মাস আগে পারিবারিকভাবে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমির সঙ্গে ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো. সাইফুল্লার ছেলে ফখরুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রেশমির ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাত। ফখরুলের চাকরি না থাকা অবস্থায় প্রায় সময় রেশমির কাছে টাকা চাইতেন, টাকা না দিলে রেশমিকে মারধর করতেন। এরই মধ্যে তাদের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। সবশেষ রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রেশমি ও তার শিশুকে গলা কেটে হত্যা করেন। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ফখরুলের বাবা সাইফুল্লাহ বলেন, রবিবার রাত ১২টায় ফখরুল বাইর থেকে বাসায় আসে। পরে রাত ২টায় ফখরুলের বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পর আমরা রুমে গিয়ে রেশমি ও তার ছেলে সালমানকে বিছানায় গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ফখরুল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে তার বড় ভাই শরীফ ধাওয়া দিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

নিহতের বাবা পারভেজ মিয়া বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েটাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। আমরা কষ্ট পাব ভেবে আমার মেয়ে আমাদের কিছুই বলত না। তিনি আরও জানান, ফখরুল মাদকাসক্ত ছিল। কিন্তু আমরা জানতাম না। এসব তথ্য আমাদের কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছিল। বিয়ের পর তাকে রিহ্যাবে পাঠানো হয়েছিল। পরে তার পরিবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। আমি আমার মেয়ে ও নাতি হত্যার বিচার চাই। নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, ফখরুল ধারালো চাকু দিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পারিবারিক কলহের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। স্ত্রীকে হত্যার সময় ছেলে কান্নাকাটি করার কারণে তাকেও হত্যা করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে হত্যার সঙ্গে ফখরুল একাই জড়িত না অন্য কেউ সঙ্গে আছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।

সর্বশেষ খবর