বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিচারিক শেষ কর্মদিবস প্রধান বিচারপতির

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিচারিক শেষ কর্মদিবস প্রধান বিচারপতির

সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা বাস্তবতার নিরিখে অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, জেনে খুশি হয়েছি যে, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে। গতকাল আপিল বিভাগের এক নম্বর এজলাসে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া বিদায়ী সংবর্ধনায় এ মন্তব্য করেন তিনি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ শফিক উল্ল্যা বক্তব্য রাখেন। দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অবসরে যাচ্ছেন আগামী ৩০ ডিসেম্বর। তবে আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হচ্ছে অবকাশ। এই সময়ে বসবে না আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ। ফলে গতকালই ছিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস হলো জনগণের আস্থা। সাধারণ মানুষের এই আস্থা অর্জনের জন্য বিচারকদের একদিকে যেমন উঁচু নৈতিক মূল্যবোধ ও চরিত্রের অধিকারী হতে হবে, তেমনি অন্যদিকে সদা বিকাশমান ও পরিবর্তনশীল আইন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও সামাজিক মূল্যবোধ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এটা অর্জন সম্ভব কেবলমাত্র নিয়মিত অধ্যয়ন, সময়মতো এবং আইনানুগভাবে বিচারিক কাজ সম্পন্নকরণের মাধ্যমে। তিনি বলেন, জেনেশুনে মামলার ঘটনার বিকৃত উপস্থাপনা করা একজন আইনজীবীর কখনই উচিত নয়। সঠিক সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং আইনি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে আদালতকে সহায়তা করা মূল উদ্দেশ্য। আইন পেশার সুমহান মর্যাদা রক্ষা করতে সব অনিয়মের বিরুদ্ধে বার ও বেঞ্চকে সোচ্চার থাকতে হবে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, এ কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে, এখনো বাংলাদেশের আইনব্যবস্থার প্রতি সাধারণ জনগণের প্রবল আস্থা রয়েছে। বিচারের সমতার নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জনে নিরন্তর কাজ করতে হবে। কারণ জনগণের আস্থাই বিচারকদের সবচেয়ে বড় অর্জন। তিনি বলেন, এ কথা অনস্বীকার্য যে, মামলার সংখ্যা বিবেচনায় আমাদের বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। মামলার জট নিরসনে দেশের অধস্তন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচারকের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। প্রধান বিচারপতি বলেন, এ কথা অনস্বীকার্য যে, বিপুলসংখ্যক মামলার জট আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। মামলার জট হ্রাস ও মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হলে বিচারকদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

সর্বশেষ খবর