শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নেতা-কর্মীদের চাঙা চায় বিএনপি

থাকছে টানা কর্মসূচি, সারা দেশে নতুন কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

শফিউল আলম দোলন ও শফিকুল ইসলাম সোহাগ

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা ও রাজনৈতিক অন্যান্য ইস্যু নিয়ে সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখতে চান দলের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে দলের ভিতরে শুরু হয়েছে শুদ্ধি অভিযান। খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে থাকছে টানা কর্মসূচি। দেশের ৩২ জেলায় দেওয়া হয়েছে সমাবেশ কর্মসূচি। নয় দিনব্যাপী এ কর্মসূচি সফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি দলীয় কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা হচ্ছে। সাংগঠনিক জেলায় আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও নীতিনির্ধারকদের পরামর্শে সেদিকে গুরুত্ব না দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণদের সামনে আনা হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে বলেছেন, সরকার যেভাবে নির্বাচন করতে চাচ্ছে তাতে বিএনপি অংশ নেবে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে বিএনপি আন্দোলনের দিকে অবস্থান নেবে। সেভাবেই সংগঠনকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে সরকার থেকে ইতিবাচক আশ্বাস পায়নি বিএনপি। বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকেও বারবার দাবি করা হয়েছে তাঁকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য। কিন্তু এ বিষয়ে সরকার সায় না দেওয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। বিএনপি মনে করে এতে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি খালেদা জিয়ার দিকেই যাচ্ছে। এ সুযোগটুকু কাজে লাগাতে চায় দলটি। এ ইস্যুতে নিয়মিত ও বিস্তৃত কর্মসূচি দিচ্ছে দলটি। এ প্রসঙ্গে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দেশনেত্রীর চিকিৎসার জন্য এদের কাছে আর অনুনয়-বিনয় করে লাভ নেই। চিকিৎসাটা তাঁর মৌলিক অধিকার। গণআন্দোলনের মাধ্যমেই তা আদায় করে নিতে হবে। সে প্রস্তুতিই আমরা নিচ্ছি। এ ব্যাপারে আমরা ধারাবাহিক কর্মসূচি দিচ্ছি। সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করব। আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত ও তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’ দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এটা একটা অনির্বাচিত সরকার। জনগণ, সংবিধান, আইন- কিছুর প্রতিই এদের কোনো শ্রদ্ধা নেই। মানবতাবোধ নেই। দেশে এখন মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। পুরো দেশটাই এ অবৈধ সরকারের হাতে বন্দী। সমগ্র দেশবাসীই আজ তাদের হাত থেকে মুক্তি চায়। ইনশা আল্লাহ গণআন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এদের থেকে দেশকে মুক্ত করব। বেগম খালেদা জিয়ারও বিদেশে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করব।’ একই বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, ঢাকা মহানগরী বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘ভোটারবিহীন এ সরকার মানবতার ভাষা বোঝে না। কাজেই আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। আন্দোলনের যে কোনো কর্মসূচি পালনের জন্য রাজধানী ঢাকাসহ সমগ্র দেশবাসী প্রস্তুত। সেই নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মতোই আরেকটি গণআন্দোলনের মাধ্যমে আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ তাঁর বিদেশে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করব ইনশা আল্লাহ।’

৩২ জেলায় সমাবেশের প্রস্তুতি : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে ২২ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ৩২ জেলায় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এসব সমাবেশ সফলের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। কর্মসূচির প্রথম দিন টাঙ্গাইল, যশোর, দিনাজপুর, বগুড়া, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমাবেশ হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা এসব সমাবেশ সমন্বয় করবেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টাঙ্গাইলের জনসভায় অংশ নেবেন। ২২, ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন জেলা সদরে প্রতিদিন ছয়টি এবং ২৮ ও ৩০ ডিসেম্বর প্রতিদিন সাতটি করে সমাবেশ হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর