রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

লাগেজ পেতে দেরি সীমাহীন ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশফেরত যাত্রীদের  দেরিতে লাগেজ পাওয়া এবং ট্রলি সংকট কোনোক্রমেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যাত্রীদের প্রতিনিয়ত অভিযোগ, সময়মতো তারা লাগেজ পাচ্ছেন না। পাশাপাশি অনেক সময় লাগেজ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির অভিযোগও আসে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে। আবার অনেকে বলছেন,  ট্রলি সংকট চলছে দীর্ঘদিন থেকেই।  

বিমানবন্দরে কাতার থেকে আসা যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস, মালিন্দ, এমিরেটসসহ বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো নিজস্ব লোকবল দিয়ে লাগেজ সরবরাহ করায় ঝামেলা হয় না। ঝামেলা শুধু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে। এদের সমস্যা কিছুতেই কাটে না। দফায় দফায় অভিযোগ করেও কোনো ফল হয়নি। কাতার থেকে আসা অপর যাত্রী আবিদুর রহিম বলেন, শনিবার বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে কাতার থেকে আসার পর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে শুধু লাগেজের জন্য অনেক যাত্রীকে ৪০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ বিষয়ে বিমানের লোকজনও কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। ট্রলি পাওয়া নিয়ে অনেক যাত্রী বলেন, আগে ট্রলি নিয়ে ক্যানোপির বাইরে আসা যেত। কিন্তু এখন ক্যানোপির বাইরে আসা যায় না। ফলে লাগেজ মাথায় করে ক্যানোপির বাইরে আসতে হয়। ক্যানোপির ভিতর গাড়ি নিয়ে প্রবেশে অনেক সময় লাগে। আর যারা গাড়ি ছাড়া আসেন তারা বা ক্যানোপির বাইরে গিয়ে গাড়ি ভাড়া করেন তাদের অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়েন। গতকালও মাথায় লাগেজ নিয়ে অসংখ্য যাত্রীকে ক্যানোপির বাইরে আসতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, বিমানবন্দরে মোট ২ হাজার ট্রলি আছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০০ ট্রলি অচল। নানা কারণে অচল ট্রলিগুলো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে বিমানবন্দরে বিপুলসংখ্যক যাত্রী আসা-যাওয়া করছে যা কভিড-পূর্ববর্তী সময়ের চেযেও বেশি। বিপুলসংখ্যক যাত্রী প্রতিদিন মধ্যপ্রাচ্য যাওয়ার জন্য করোনা টেস্ট করাতে বিমানবন্দরের পার্কিং এলাকায় যাচ্ছেন। সেখানে ৪-৬ ঘণ্টা করোনা টেস্টের জন্য নমুনা দিয়ে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করেন। তারা ট্রলিগুলো সঙ্গে নিয়ে যাওয়ায় টার্মিনাল ভবনে কিছু ট্রলি সংকট দেখা যায়। বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন, বিমানে এখন লাগেজ মিসিংয়ের সংখ্যা নেই বললেই চলে। তবে নানা কারণে হয়তো পৌঁছাতে একটু বিলম্ব হয়। লাগেজ নামাতে একটু সময় লাগে। সেটা অস্বাভাবিক নয়। 

ট্রলি সংকটের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি বলেন, ট্রলি নিয়ে যদি কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়, যদি সংকটের পেছনে কারও গাফিলতি পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে। যাত্রীদের বিদেশযাত্রা ও আগমনকে আরও আরামদায়ক করতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন করে ২ হাজার ৫০০ ট্রলি যুক্ত করা হবে। তখন সংকট পুরোপুরি কেটে যাবে।

সর্বশেষ খবর