সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

টিআরের টাকায় সিসি ক্যামেরা

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নতুন কর্মসূচি

উবায়দুল্লাহ বাদল

সোলার প্যানেলের পর এবার গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি টেস্ট রিলিফ (টিআর) খাতে কেনা হবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা, ধর্মীয়, জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এসব সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এজন্য পরিপত্র জারি করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে- এ বিষয়টি বিদ্যমান গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর-খাদ্যশস্য/নগদ টাকা) কর্মসূচি নির্দেশিকা-২০১৪-তে অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ টিআর নির্দেশিকা অনুযায়ী এসব ক্যামেরা কেনা হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

টিআর খাতের টাকায় সিসি ক্যামেরা কেনার বিষয়ে সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্র সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা আসন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের অনুকূলে নগদ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ওই অর্থে সারা দেশের গ্রামীণ রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ বিভিন্ন শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নকে আরও যুগোপযোগী করতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা, ধর্মীয় ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানে এবং জনবহুল স্থানে জনসাধারণের জানমালসহ সার্বিক নিরাপত্তা এবং সরকারি সম্পদ রক্ষায় ‘ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন’ প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘আগে টিআরের টাকায় সোলার প্যানেল কেনা হতো। বর্তমানে সারা দেশে বিদ্যুৎ শতভাগ নিশ্চিত হওয়ায় এখন সেটা বাতিল করা হয়েছে। এর পরিবর্তে সিসি ক্যামেরা কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গ্রামীণ অবকাঠামো সুদৃঢ়করণ, জননিরাপত্তা ও সরকারি সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার এ ধরনের প্রকল্প নিতেই পারে। তবে এ ক্যামেরা যেহেতু সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করছে না, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যেহেতু ক্যামেরাগুলো কেনা হবে তাই এর একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। প্রতিটি ক্যামেরার মূল্য, এর গুণগত মান, ক্যামেরার স্পেসিফিকেশন ও সুনির্দিষ্ট মাপকাঠি নির্ধারণ করে না দিলে এ কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতি হতে পারে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এর আগে প্রতি বছর সোলার প্যানেল স্থাপন কর্মসূচিতে যে পরিমাণ চাল বরাদ্দ দেওয়া হতো টাকার অঙ্কে তা ২ হাজার ৭১৭ কোটি। যার অর্ধেক ১ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা সোলার প্যানেলসহ জরুরি নয় এমন কাজে খরচ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। অধিকাংশ সোলার প্যানেল বসানোর কিছুদিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। যদিও ওইসব সোলার সরবরাহের দায়িত্ব ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠানের। এখন সিসি ক্যামেরা কেনা হবে বাজারমূল্যে যে কোনো কোম্পানির। তা নির্ধারণ করবে টিআর-সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কমিটি। তারা কত টাকার মধ্যে কী ধরনের সিসি ক্যামেরা কিনবে তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর