কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া আবাসন প্রকল্পের একটি ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন আবাসনের জামাল শেখের ছেলে সুমন শেখ (২৫) ও তার স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (২০)। শনিবার রাত দেড়টার দিকে ওই আবাসন প্রকল্পের নিজ ঘর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাদের একমাত্র শিশু সন্তান সোহান (৩) কান্নাকাটি করছিল। গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসাপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ একটি কক্ষ থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। নিহত সুমনের বাবা জামাল শেখ জানান, রাত পৌনে ১২টার দিকে নাতির কান্নার শব্দ শুনে ঘরের দিকে এগিয়ে যাই। গিয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি ও তাদের ডাকাডাকি করি। ডাকে সাড়া না দেওয়ায় ঘরের জানালা ভেঙে দেখি ছেলে ঘরের আড়ার সঙ্গে রশিতে ঝুলছে আর ছেলের বউ চৌকিতে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। হাতে কারেন্টের তার পেঁচানো। চিৎকার শুরু করলে আবাসনের লোকজন ছুটে আসে এবং ঘরের দরজা ভেঙে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে। পরে স্থানীয় ডাক্তার এসে তাদের মৃত ঘোষণা করেন এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থানায় নিয়ে যায় এবং গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সুমনের স্ত্রী সোনিয়ার পিতা খোকসার হেলালপুরের লিটন হোসেন জানান, আইসক্রিম বিক্রেতা সুমনের সঙ্গে তার মেয়ের চার বছর আগে বিয়ে হয়। তার জামাই ও মেয়ের মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কীভাবে মারা গেছে জানি না। ময়নাতদন্ত করলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। কয়া আবাসনের সভাপতি আজিবর রহমান বলেন, রাত ১২টার দিকে খবর পেয়ে দৌড়ে যাই। গিয়ে দেখি মেয়ের গলায় কারেন্টের তার আর ছেলেটি ঝুলছে ঘরের আড়ায়। জানা গেছে, তিন দিন পর আত্মীয়বাড়ি থেকে শনিবার সন্ধ্যায় নিজবাড়ি আবাসনে ফিরে আসেন সুমন ও সোনিয়া। স্বাভাবিকভাবেই রাতেই ঘুমিয়ে পড়েন তারা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সুমন গলায় রশি পেঁচিয়ে এবং তার স্ত্রী সোনিয়া বৈদ্যুতিক শর্ট নিয়ে আত্মহত্যা করেছে।