বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কভিড টেস্ট নিয়ে অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে না আমিরাত

আলাউদ্দিন আরিফ

সংযুক্ত আরব আমিরাত যাতায়াতের জন্য কভিড-১৯ সংক্রমণ সংক্রান্ত আরটি-পিসিআর টেস্টের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহারে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে সাড়া নেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের। ২৯ নভেম্বর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যাত্রীদের জন্য আরটি-পিসিআর টেস্টের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার সংক্রান্ত চিঠি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে চেষ্টা করে কোনো ফল পায়নি। পিসিআর টেস্ট ছাড়া যাত্রীরা সংযুক্ত আরব আমিরাত যেতে পারছেন না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-সহ সংশ্লিষ্ট সবাই চেষ্টা করছেন যাতে বিমানবন্দরে পিসিআর টেস্ট করাতে না হয়। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, আরটি-পিসিআর টেস্ট নিয়ে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। হাজার হাজার যাত্রীকে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় বিমানবন্দরে। পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে উড়োজাহাজে উঠতে হয়। অনেকে রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ায় নানা বিড়ম্বনায় পড়েন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিমানবন্দর হেলথ অফিসার ডা. মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আরটি-পিসিআর টেস্ট শুরুর পর থেকে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৫ জনের (১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত) পিসিআর টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৯ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৯৬ জনের। বিমানবন্দরে ৬ ঘণ্টা আগে পিসিআর টেস্ট করানোর বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহারে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের চিঠি প্রসঙ্গে ডা. মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যানসহ সরকারের বিশেষ টিম কাজ করছে। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে পিসিআর টেস্ট প্রত্যাহারের বিষয়টি কার্যকর করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আশা করছি আমরা এ বিষয়ে পজিটিভ রেজাল্ট পাব।’ পররাষ্ট্র সচিবকে লেখা বেসামারিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণায়ের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গমনকারী সব যাত্রীদের জন্য যাত্রা শুরুর ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে একবার ও ৬ ঘণ্টা পূর্বে পুনরায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কভিড-১৯ সংক্রমণ সংক্রান্ত পরীক্ষার বিধান সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিগত এক মাস ধরে সংক্রামণের মাত্রা ১ শতাংশ স্থিতাবস্থায় রয়েছে। এমতাবস্থায় বিগত এক মাস বাংলাদেশে কভিড-১৯ সংক্রামণের হার বিবেচনাপূর্বক বিমানবন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোর্ড অব এয়ারলাইনস রিপ্রেজেন্টেটিভ (বার)-এর ভাইস চেয়ারম্যান আশীষ রায় চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পিসিআর টেস্টের বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তারা সেই বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার না করলে পিসিআর টেস্ট ছাড়া এয়ারলাইনসগুলো যাত্রী পরিবহন করবে না। তবে মন্ত্রণালয় পিসিআর টেস্টের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহারে তাদের যুক্তি তুলে ধরতে পারে।’

গত ২৯ সেপ্টেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে আরটি-পিসিআর ল্যাবের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- গুলশান ক্লিনিক লিমিটেড, স্টেমজ হেলথকেয়ার বিডি লিমিটেড, সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, এএমজেড হাসপাতাল লিমিটেড, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক। প্রতিষ্ঠানগুলো গতকাল পর্যন্ত ১ লাখ ৯০ হাজারের বেশি আরটি-পিসিআর টেস্ট করেছে। প্রতিটি টেস্টের জন্য তারা যাত্রীদের কাছ থেকে নিয়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে।

সর্বশেষ খবর