শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মাঝ নদীতে আগুনে ছাই ৩৯ প্রাণ

♦ মধ্যরাতে যাত্রীবাহী ‘অভিযান-১০’ লঞ্চে ভয়াবহ আগুন ♦ দগ্ধ শতাধিক ♦ লঞ্চ মালিক বললেন- ষড়যন্ত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল, ঝালকাঠি ও বরগুনা প্রতিনিধি

মাঝ নদীতে আগুনে ছাই ৩৯ প্রাণ

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে জ্বলছে ঢাকা-বরগুনাগামী যাত্রীবাহী অভিযান-১০ লঞ্চ (বাঁয়ে)। ভিতর থেকে পুড়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঝালকাঠির সুগন্ধা বিষখালী নদীর মোহনায় ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অন্তত ৩৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন আরও শতাধিক। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের তথ্যমতে, দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ রয়েছেন ৬০ জনের বেশি। নিখোঁজের বড় অংশই শিশু ও নারী। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার পর সুগন্ধা পাড়ে এখন শুধুই পোড়া গন্ধ ও স্বজনদের আহাজারি। যাত্রীরা জানান, যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়েই ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা করে অভিযান-১০ লঞ্চটি। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী অতিক্রমকালে দিয়াকুল নামক স্থানে যাত্রীরা লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে বিকট শব্দ শুনতে পান। তখন অধিকাংশ যাত্রী গভীর ঘুমে। চোখ খুলেই দেখেন চারদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। মুহূর্তে লঞ্চের মধ্যে আগুন ধরে যায়। আগুন নিয়েই লঞ্চটি চলতে থাকে। লঞ্চটি পাড়ে আসার আগেই অগ্নিদগ্ধ হন অনেকে। তিন ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা লঞ্চ থেকে প্রাণ বাঁচাতে শীতের রাতেই অনেকে নদীতে ঝাঁপ দেন। শিশুদের নিয়েও নদীতে ঝাঁপ দেন কেউ কেউ। নদীতে লাফিয়ে পড়া অনেক যাত্রীকে এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর মা-বাবার হাত থেকে ছুটে হারিয়ে গেছে অনেক শিশু। বিআইডব্লিউটিএর তথ্যানুযায়ী- অভিযান-১০ লঞ্চে ২৮০ জন যাত্রী ও ২৫ জন স্টাফ ছিল। তবে লঞ্চের যাত্রীরা দাবি করেছেন, পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ছেড়ে আসে। পথে কিছু যাত্রী নেমে যায়, কিছু যাত্রী নতুন করে লঞ্চে ওঠে। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল লঞ্চের সবগুলো ডেক।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, রাত ৩টা ২৮ মিনিটে তাদের কাছে অগ্নিকান্ডের খবর আসে। তাদের কর্মীরা ৩টা ৫০ মিনিটে সেখানে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের চেষ্টায় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা, কোস্ট গার্ড ও পুলিশ সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করেন। সন্ধ্যা ৬টায় অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক ফরিদ উদ্দীন ভুইয়া। অনেকে নিখোঁজ থাকায় আজ শনিবার সকালে পুনরায় উদ্ধার অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. আমির হোসেন বলেন, দুই শর বেশি যাত্রী আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বিকালে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, সকাল ৬টা থেকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দগ্ধ রোগী আসা শুরু হয়। মোট ৭৪ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৩৩ জন ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা সবাই বরগুনা জেলার বাসিন্দা। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল দুপুরে ঝালকাঠি পৌরমিনি পার্কে গিয়ে দেখা যায় সারিবদ্ধভাবে উদ্ধারকৃত লাশগুলো রাখা হয়েছে। স্বজনরা লাশ শনাক্তের চেষ্টা করছেন। তবে অধিকাংশ মৃতদেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।

দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ঝালকাঠি, বরগুনা ও বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে। বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেলে অগ্নিদগ্ধদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় গুরুতর অনেক রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছে ঢাকায়। এ দুর্ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটি ও জেলা প্রশাসনের মোট ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা-বরগুনা রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘অভিযান-১০’-এ অগ্নিকান্ডের পর ভিতর থেকে মরদেহ উদ্ধার করছেন স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা    -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিস্ফোরণের পর লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে আগুন : লঞ্চে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত কীভাবে, তার একটি ধারণা পাওয়া গেছে বেঁচে যাওয়া যাত্রী ও ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্যে। ওই লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী আবদুর রহিম জানান, রাতে ডেক থেকে তিনি হঠাৎ বিকট শব্দ পান। তারপর লঞ্চের পেছন দিক থেকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখেন। অল্প সময়ের মধ্যে পুরো লঞ্চে আগুন ধরে যায়। আতঙ্কিত হয়ে তিনি নদীতে লাফিয়ে পড়েন। নদীর পাশের দিয়াকুল গ্রামের লোকজন নৌকা নিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের অংশটি বেশি পুড়েছে। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা।

যা বললেন সেই লঞ্চের মালিক : দুর্ঘটনাকবলিত এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক মো. হাম জামাল দাবি করেছেন, দোতলায় যাত্রীদের থেকে আগুন লেগেছে। এরপর আগুন তিনতলায় ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে প্রাণহানির ঘটনা বেশি হয়েছে। ইঞ্জিন থেকে আগুন লাগার বিষয় নাকচ করে দিয়ে হাম জামাল বলেছেন, মাসখানেক আগে নতুন ইঞ্জিন লাগানো হয়েছে। নতুন ইঞ্জিন লাগানোর পর চারটি ট্রিপ ঢাকা-বরগুনা চলাচল করেছে। লঞ্চে থাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতির মেয়াদ আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত আছে বলে দাবি করেন তিনি।

এক ঘণ্টা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চলছিল লঞ্চটি : আগুন লাগার পর অন্তত এক ঘণ্টা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় লঞ্চটি চলছিল বলে জানিয়েছে নৌপুলিশ। নৌপুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বরিশাল জোন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, রাত সাড়ে ৩টার দিকে লঞ্চটি নলছিটি ক্রস করার সময় ইঞ্জিনে আগুন লাগে। কিন্তু লঞ্চটি নলছিটিতে স্টপেজ দেয়নি, ঝালকাঠিতেও স্টপেজ দেয়নি। লঞ্চটি প্রায় ১ ঘণ্টা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চলতে থাকে। পরবর্তীতে ইঞ্জিনের আগুন সম্ভবত তেলের ট্যাংকিতে লাগে এবং বিকট শব্দে লঞ্চটি ঘটনাস্থলে এসে থেমে যায়। চালক বা ইঞ্জিনের দায়িত্বে যারা ছিলেন, তাদের গাফিলতির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন তিনি।

শরীরে আগুন নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেন বহু মানুষ : আগুনের সঙ্গে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন লঞ্চ। শরীরের কাপড়ে আগুন ধরে যায় অনেকের। জীবন বাঁচাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে শীতের গভীর রাতে ঝাঁপ দেন বহু মানুষ। তাদের অনেকে বেঁচে ফিরেছেন। এখন হাসপাতালে ভর্তি। আবার এক দিনেও সন্ধান মেলেনি বহু মানুষের।

স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়ে স্বামী ফিরলেন লাশ হয়ে : হাসপাতালের মেঝেতে অগ্নিদগ্ধ দুই হাত উঁচু করে বসে আছেন হনুফা বেগম। পাশেই পুড়ে যাওয়া যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন মেয়ে রুবি আক্তার। অন্যদিকে হনুফার স্বামীর মৃতদেহ বরিশাল লাশঘরে। দীর্ঘদিন স্ত্রী হনুফা বেগমের শারীরিক নানা অসুস্থতার কারণে ঢাকায় চিকিৎসা করিয়ে মেয়ে রুবিসহ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন পাথরঘাটার আবদুর রাজ্জাক। পথেই লঞ্চে অগ্নিকান্ডে নিভে গেছে তার জীবন। প্রথমে মা-মেয়েকে খুঁজে পেলেও আবদুর রাজ্জাককে পাচ্ছিলেন না স্বজনরা। পরে লাশঘরে গিয়ে পাওয়া যায় এই শিক্ষকের নিথর দেহ।

বাবা-মা কাতরাচ্ছেন হাসপাতালে, শিশু নিখোঁজ নদীতে : ‘লঞ্চে আগুন দেইখ্যা ঘুমের ছোট মাইয়াডারে কোলে লইয়া নদীতে লাফ দিছি। কয়েক মিনিট পর হাত দিয়া মাইয়াডা ছুইটা যায়। মোর মাইয়াডারে পাই নাই, মোর মাইয়াডারে আইন্যা দেন।’ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন বাবা নাসরুল্লাহ তুহিন জ্ঞান ফিরলেই এভাবে আহাজারি করছিলেন। পাশের বেডেই একমাত্র মেয়ের শোকে অজ্ঞান স্ত্রী তানিয়া বেগম। আড়াই বছরের শিশুসন্তানকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন বাবা-মা। তুহিনের বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা গ্রামে। তিনি ঘুটাবাছা বাজার জামে মসজিদের ইমাম। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক অগ্নিদগ্ধ মানুষ শেরেবাংলা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। তাদের বর্ণনা মতে, নিখোঁজ রয়েছেন শিশু-বৃদ্ধসহ দেড় শতাধিক মানুষ।

নিখোঁজদের খোঁজে দিশাহারা স্বজনরা : সুগন্ধার পাড়ে গতকাল সকাল থেকে দিগ্বিদিক ঘুরছেন সুমন মিয়া। ঢাকা থেকে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে বরগুনা আসছিলেন তার স্ত্রী সন্তানসহ চারজন। একজনের খোঁজ মেলেনি। হতবিহ্বল হয়ে বারবার পোড়া লঞ্চ ও আশপাশে খুঁজে চলেছেন তিনি। নিখোঁজ সবার বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের মোল্লার হোড়া গ্রামে। লঞ্চে অগ্নিকান্ডে হতাহত ও নিখোঁজের ঘটনায় এমন অসংখ্য স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে নদীপাড়ের বাতাস। অনেকে খুঁজে পাননি স্বজনের লাশটিও। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছেন নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে। ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেছেন, ওই দুর্ঘটনায় কতজন নিখোঁজ হয়েছে তার সঠিক হিসাব তার কাছে নেই। তবে ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি মৌখিকভাবে তাদের স্বজন নিখোঁজের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনকে।  বেঁচে ফেরা যাত্রীদের মতে, নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ এখনো দেড় শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা : ঝালকাঠিতে যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকান্ডে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও লাশ দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে আরও ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। একই সঙ্গে দুর্ঘটনায় দগ্ধদের সুচিকিৎসায় শেরেবাংলা মেডিকেলে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট চালু করার কথা জানিয়েছেন তিনি। গুরুতরদের ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। গতকাল দুপুরে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ রোগীদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

লঞ্চ মালিক বললেন ষড়যন্ত্র : এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখ দাবি করেছেন, ‘অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক। কাউকে সন্দেহ করা যাবে না। কিন্তু অবশ্যই কোনো ষড়যন্ত্র আছে। ইঞ্জিনে আগুন লাগলে ইঞ্জিনরুম পুড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু আগুন ওপরে বা সামনে যাওয়ার কথা নয়। অথচ লঞ্চের দ্বিতীয় তলার মাঝখান থেকে এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর