শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দেশের ভয়াবহ পাঁচ লঞ্চডুবি

প্রতিদিন ডেস্ক

গত ২০ বছরে বাংলাদেশের নৌপথে বড় ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে দেড় হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম-পরিচালক মোহাম্মদ মুজিবুল হক মুনির বলেছেন, লঞ্চডুবির বড় ঘটনার অনেকটিই মেঘনায় ঘটেছে।

গতকাল বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়- নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় বাংলাদেশে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম বিভিন্ন ধরনের নৌযান। অন্য যোগাযোগমাধ্যমের তুলনায় নিরাপদ ও ব্যয়-সাশ্রয়ী হওয়ায় দেশের যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের একটি বড় অংশ এখনো নৌপথেই হয়। যান চালনায় নিয়ম না মানা এবং অদক্ষ শ্রমিকদের দিয়ে লঞ্চ বা ফেরি পরিচালনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্য পরিবহনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং যান্ত্রিক ত্রুটি এমন নানা কারণে নৌপথে বড় দুর্ঘটনা ঘটে।

পিনাক- : ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট আড়াই শর বেশি যাত্রী নিয় পদ্মা নদীতে ডুবে যায় পিনাক-৬ নামের একটি লঞ্চ। বাংলাদেশ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, ওই লঞ্চটি তোলা সম্ভব হয়নি এবং এর ধ্বংসাবশেষও এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছিল, আর ৫০ জন যাত্রীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাকিরা সাঁতরে এবং জেলেদের সহায়তায় তীরে উঠতে পেরেছিলেন।

এমভি নাসরিন- : ২০০৩ সালের ৮ জুলাই ঢাকা থেকে ভোলার লালমোহনগামী এমভি নাসরিন-১ নামের লঞ্চটি চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় ডুবে যায়। বিআইডব্লিউটিএ বলছে, অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল বোঝাইয়ের কারণে লঞ্চটির তলা ফেটে গিয়েছিল। ডুবে যাওয়ার সময় লঞ্চটিতে কত যাত্রী ছিলেন সে বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। তবে ওই দুর্ঘটনায় সরকারি হিসাবে প্রায় সাড়ে ছয় শ লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলছিলেন, মৃত্যুর হিসাবে এই লঞ্চডুবিকে দেশের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা বলা হয়।

এমভি সালাউদ্দিন- : ২০০২ সালের ৩ মে চাঁদপুরের ষাটনলসংলগ্ন মেঘনা নদীতে ডুবে যায় সালাহউদ্দিন-২ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চ। এতে ভোলা ও পটুয়াখালীর প্রায় চার শ যাত্রী মারা গেছেন। ওই দুর্ঘটনার পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের করা একটি তদন্ত কমিটি নকশামতো লঞ্চ নির্মাণ না করায় মালিককে এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহনের জন্য মাস্টারকে অভিযুক্ত করে। এতে ওই লঞ্চের মালিককে জরিমানা এবং মাস্টারকে চাকরিচ্যুত করা হলেও অন্যদের শাস্তি হয়নি।

এমভি রাজহংসী : ২০০০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঈদুল আজহার রাতে চাঁদপুরের ষাটনলে মেঘনা নদীতে এমভি জলকপোত ও এমভি রাজহংসী নামে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে রাজহংসী লঞ্চটি তলিয়ে যায়। এতে ওই লঞ্চের ১৬২ যাত্রী নিহত হন।

অ্যাটলাস স্টার : ১৯৮৬ সালে অ্যাটলাস স্টার নামে একটি লঞ্চ ডুবে ২০০ যাত্রী নিহত হন। লঞ্চটি ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে ডুবে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া ২০০৫ সালে একটি ফেরি ডুবে ১১৮ যাত্রী নিহত হন এবং ২০০৫ সালে এমএল মিতালি ও এমএল মজলিশ নামে দুটি ছোট লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে ডুবে গিয়ে প্রায় ৩০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর