রবিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মোর মাইয়াডা কোল জুইড়া আইয়া বুকটা খালি কইরা গ্যালে

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি

পাথরঘাটায় তিনজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তারা হলেন উপজেলার পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রাজ্জাক (৫৫), চরদুয়ানী ইউনিয়নের সায়েদা (১৫) ও কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা গ্রামের নাসরুল্লাহ তুহিনের মেয়ে তাবাচ্ছুম তুবা (২)।

এর আগে শুক্রবার বেলা ২টার দিকে আবদুর রাজ্জাকের লাশ শনাক্ত করেন স্বজনরা। গতকাল সকাল ১০টায় পাথরঘাটা পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়। এর আগে বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে তাবাচ্ছুমের লাশ গ্রহণ করেন বাবা নাসরুল্লাহ তুহিন। তুহিন বলেন, ‘মোর মাইয়াডা কোল জুইড়া আইয়া আবার বুকটা খালি কইরা গ্যালে। মোরা আর বাঁচমু না।’ তুহিন আরও বলেন, ‘আগুন থিক্যা বাঁচতে মাইয়া কোলে লইয়া পানতে (পানিতে) লাফ দিছিলাম। পাড়ে উইঠা দেহি মোর গেদু কোলে নাই। হারা দিন বিছরাইছি কোনোহানে পাই নাই।’

নিহত আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী হনুফা বেগম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, হঠাৎ আগুন দেখে ছোটাছুটি করছে লঞ্চের মানুষজন। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। মানুষের কান্নাকাটি এবং কাঠ-লোহা পোড়ার বিকট শব্দে একাকার। কিছুক্ষণ পর আমাদের শরীরে আগুন লাগার পর স্বামী আমাকে ও মেয়ে রুবিকে লঞ্চের সামনের দিকে ঠেলে দেন। এরপর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে দেখি আমরা হাসপাতালে। স্বামীকে আর খুঁজে পেলাম না। আজ ফিরলেন লাশ হয়ে।’

নিহত আবদুর রাজ্জাক পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা দাখিল মাদরাসার ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। ১০ দিন আগে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।

সর্বশেষ খবর