মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

জাতীয় সরকার চলবে যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সরকার চলবে যেভাবে

রাজনৈতিক সংকট নিরসনে এত দিন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি করে আসছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। কী নিয়মে সে সরকার চলবে গতকাল তিনি তা বর্ণনা করেন। বিদ্যমান সংকট নিরসনে জাতীয় সরকার গঠনের যে প্রস্তাব তিনি দিয়েছেন তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। তারা জাতীয় সরকার গঠনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে আ স ম রব বলেন, শাসন প্রক্রিয়া ও সমাজে যে গভীর ক্ষত এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ গণজাগরণ ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় নৈতিক শক্তির পুনরুজ্জীবন। জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমেই এটা করা সম্ভব। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে জাসদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা গ্রহণ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠনের কারণে দেশ আজ জাহান্নামে পরিণত হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়- জাতীয় সরকারের লক্ষ্য হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক একটি নৈতিক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ। এ সরকারের গঠন, রূপরেখা ও মেয়াদকাল ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। আর জাতীয় সরকারের উদ্দেশ্য হবে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’-এর ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি প্রণয়ন; সাংবিধানিক ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংবিধানের আওতায় প্রতিস্থাপন; আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত; রাজবন্দীদের মুক্তি ও সব গায়েবি মামলা প্রত্যাহার; অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি স্বাধীন ‘নির্বাচন কমিশন’ প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।

এ ছাড়া সাংবিধানিক কমিশন ও জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনসহ জাতীয় সরকারের ১৩ দফার ন্যূনতম কর্মসূচিও উত্থাপন করা হয়। গণফোরামের একাংশের সভাপতি মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বহুদূরে। দেশের মানুষ আজ অধিকারবঞ্চিত। জনগণের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে সত্যিকার অর্থে জনতার কল্যাণে রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশ ও জাতিকে রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক বলেন, সরকার পুরো নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। গণআন্দোলন-গণসংগ্রামের পথে রাজপথে সরকারকে পিছু হটাতে না পারলে ভোট ও গণতান্ত্রিক অধিকার, মেরুদন্ডসম্পন্ন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকারসহ কিছুই অর্জন করা যাবে না। সরকার ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা ছাড়া জনগণের মুক্তি নেই।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। একটা সরকার কতটা ফ্যাসিস্ট হতে পারে তার সর্বোচ্চটা দেখিয়েছে বর্তমান সরকার। এ অবস্থায় রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করতে নতুন জাতীয় সনদ তৈরি করা প্রয়োজন।

জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, জেএসডির কার্যকরী সভাপতি সিরাজ মিয়া ও কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর