বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে শেখ হাসিনা

খুনিদের আশ্রয় দিয়ে আবার সবক দেয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুনিদের আশ্রয় দিয়ে আবার সবক দেয়

বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ এবং মুজিববর্ষ স্মরণিকা ‘ন্যায়কণ্ঠ’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে না দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে আমেরিকা মানবাধিকার-গণতন্ত্রের সবক দেয়। তাদের মুখে মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়, ন্যায়বিচারের কথা শুনতে হয়।   

গতকাল বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ সুুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক মুজিববর্ষ স্মারক প্রকাশনা বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ এবং মুজিববর্ষ স্মরণিকা ‘ন্যায় কণ্ঠ’-এর মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং স্মারক গ্রন্থ ও স্মরণিকার সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান স্বাগত বক্তৃতা করেন। মুজিব স্মারক গ্রন্থ এবং স্মরণিকার ওপর অনুষ্ঠানে একটি ডকুমেন্টারি প্রচারিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকা, যারা সবসময় ন্যায়বিচারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটাধিকারের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। আমি সরকারে আসার পর এ পর্যন্ত আমেরিকার যতজন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তাদের প্রত্যেককে অনুরোধ করেছি বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত দিতে। তাদের জিজ্ঞাসা করেছি, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আপনারা কীভাবে আশ্রয় দেন? আপনাদের জুডিশিয়ারি সিস্টেম কীভাবে আশ্রয় দেয়? কীভাবে আপনারা একজন খুনিকে আশ্রয় দেন? খুনি রাশেদ এখন আমেরিকায়। আর নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে কানাডা। তারপরও তাদের কাছ থেকে আমাদের আইনের শাসনের সবকও শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথাও শুনতে হয়, ন্যায়বিচারের কথাও শুনতে হয়! সেটিই আমার কাছে খুব অবাক লাগে।  তিনি বলেন, আইনের শাসন কায়েম হবে, আইনে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে কী হয়েছিল? বিচারের বাণী নীরবে-নিভৃতে কেঁদেছে। ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর ইমডেমনিটি অর্ডিন্যান্স পাস হলো। ওই খুনিদের কোনো দিন বিচার করা যাবে না, ওই হত্যার মামলা করা যাবে না, এমন অধ্যাদেশ দেওয়া হলো। ১৫ আগস্টের ঘটনা কারবালার ঘটনাকেও হার মানিয়েছিল উল্লেখ করে এক রাতে নিজের পরিবারের সবাইকে হারিয়ে দুই বোনের বেঁচে থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে খুনের পর যদিও প্রথমে ক্ষমতায় এসেছিল আমার বাবার মন্ত্রিসভার মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক। সেটি সংবিধান লঙ্ঘন করেই তার ক্ষমতা আরোহণ। কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক অফিসার ও জিয়াউর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। জিয়াউর রহমানের প্ররোচনায় এ ঘটনা ঘটানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্যে যে ষড়যন্ত্রকারী ছিল, তা এখনো বের করা যায়নি। আশা করি, একদিন সেটিও বের হবে। ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পর খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা গ্রহণের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আসলে বেইমান বা মোনাফেক যারা হয়, তাদের অন্য মানুষ ব্যবহার করে, কিন্তু কখনো রাখে না। আসল যে থাকে, সে থাকে পর্দার আড়ালে। পলাশীর ঘটনাও যদি দেখি, তখনো মীরজাফর ব্রিটিশ কোম্পানির সঙ্গে মিশে ষড়যন্ত্র করে নবাব হওয়ার আশায়। সে কিন্তু তিন মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আপনারাও একটু দেখবেন, খন্দকার মোশতাকও ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। পর্দার আড়াল থেকে আসল লোক ক্ষমতা দখল করে চলে আসে, সেটি হলো জেনারেল জিয়াউর রহমান। সেনাপ্রধান হিসেবে জিয়ার ক্ষমতা দখল করে দল গঠন করাসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের আর্মি রুলস অ্যান্ড অ্যাক্টেও ছিল যে সেনাপ্রধান কখনো নির্বাচন করতে পারবেন না। কিন্তু জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে ঘোষণাই শুধু দেয়নি, এরপর গণভোট দিলো, হ্যাঁ-না ভোট দিলো। তারপর আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও করল এবং সেই নির্বাচন করেছিল সে তখন ঘোষিত রাষ্ট্রপতি এবং সেনাবাহিনী প্রধান। আমার প্রশ্ন, গণতন্ত্রটা তাহলে কোথায়? আমাদের অনেকেই তার পেছনে খুব বাহবা দিয়ে নেমে পড়ল, হাতে তালি দিয়ে গণতন্ত্র পেয়েছে? সেনাপ্রধান এবং ঘোষিত রাষ্ট্রপতি; আর্মি রুলস যেমন ব্রেক করল, সংবিধান লঙ্ঘন করল তারপর ইলেকশন মানে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রহসন দিয়ে ক্ষমতায় এসে এর পরে দল গঠন করে জিয়াউর রহমান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দল গঠনের পর রাজনীতিবিদ হতে জিয়াউর রহমানের আর কোনো লজ্জা থাকল না। উর্দি খুলে তখন সেই দল গঠন। আর ক্ষমতায় উত্তরণ করে তার পরে তার রাজনীতিতে আসা, তারপর দল গঠন। খুব স্বাভাবিকভাবে দল গঠন করতে গিয়ে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মী, নির্বাচিত প্রতিনিধি, যে যেখানে ছিল একেবারে সেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে সবাইকে চাপ দিয়ে দিয়ে তার দলে ভেড়ানো শুরু করে। আর যে দলে না ভিড়বে তাকে ভোগ করতে হবে অত্যাচার নির্যাতন মিথ্যা মামলা। নির্যাতন করে করে অনেককে দলে ভেড়ানো হলো, কাউকে প্রলোভন দিয়ে, কেউ লোভে এলো, কেউ অত্যাচারিত হয়ে এলো, কেউ নির্যাতিত হয়ে এলো; এভাবে দল গঠন। সেই দলটাই হচ্ছে বিএনপি। শেখ হাসিনা আরও বলেন, সেখানে আবার শোনা গেল বহুদলীয় গণতন্ত্র, আর সেখানে নির্বাচনের সামনে প্রহসন। একটি দল জন্ম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলতে শিখল না, হাঁটতে শিখল না, এ-গাছের ছাল ও-গাছের বাকল দিয়ে একটি দল করে সেই দল আবার নির্বাচনে একেবারে টু থার্ড মেজরিটি (দুই-তৃতীয়াংশ) পেয়ে যায়! অর্থাৎ অবৈধভাবে দখল করা ক্ষমতাকে ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে সেই ক্ষমতাকে কণ্টকমুক্ত করার জন্য একটা প্রচেষ্টা। আর ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে খুনিদের বিচার না করা, বিচারহীনতার  কালচার। আমরা কোনো একটা ঘটনা ঘটলে যেমন বিচারের জন্য যখন সবাই দাবি করে, আমার তখন এটাই মনে হয়। আমরা যারা আপনজন হারিয়েছিলাম, আমাদের তো ৩৬ বছর সময় লেগেছিল বিচার পেতে। সেটিও যখন আমরা বেঁচে ছিলাম, জানি না আল্লাহর ইচ্ছা! ক্ষমতায় আসতে পেরেছিলাম বলেই ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিলের জন্য আমরা আপিল করি। আমরা রিট করি, মামলা করা হয়, সে জন্য ধন্যবাদ জানাই উচ্চ আদালতকে। উচ্চ আদালত সেই জিনিসটা আমলনামায় নেয় এবং সেটার ওপর এই ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সটা বাতিল করে। সে জন্য আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ, যারা এই অর্ডিন্যান্স বাতিল করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাহলে মামলা করার জন্য আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, আমাদেরকে ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার বিচার চাওয়ার অধিকার হরণ করা হয়েছিল। তাহলে গণতান্ত্রিক অধিকারটা ছিল কোথায়? মৌলিক অধিকার কোথায় ছিল? মানুষের অধিকার কোথায় ছিল? আমি যদি বেঁচে না থাকতাম বা আর কোন দিন ক্ষমতায় আসতে না পারতাম তাহলে কোনো দিন আর এই বিচার হতো না। এটিই হলো বাস্তবতা। সেই ইনডেমনিটি অর্থাৎ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে যেত। কিন্তু আমাদের সংবিধানে তো ন্যায়বিচার পাওয়ার কথা বলা আছে। তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারে আসার পর বিচার হয়েছে। যদিও এই বিচারের রায় দিতে গিয়ে বা বিচার করতে গিয়ে অনেকেই উচ্চ আদালতে সেই সাহসটা পাননি, আমি জানি! একটা পর্যায়ে সরে গেছেন, কেন সেটা! তারপরও আমি বলব, এই বিচারের রায় আমরা পেয়েছি, এই বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। এখনো কয়েকজন পালিয়ে আছে। তাদেরও খোঁজা হচ্ছে। তার চেয়েও বড় কথা আমেরিকার মতো জায়গা, যারা সবসময় ন্যায়বিচারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটাধিকারের কথা বলে, তারা মানবাধিকারের কথা বলে; কিন্তু আমাদের যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল, আমরা যে ন্যায়বিচার পাইনি, তারপর যখন এই বিচার হলো, সেই খুনিদের আশ্রয় দিয়ে বসে আছে। আমি সরকারে আসার পর থেকে বারবার যতজন রাষ্ট্রপতি এসেছে, প্রত্যেকের কাছে বারবার অনুরোধ করেছি, একটা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আপনারা কীভাবে আশ্রয় দেন? আপনাদের জুডিশিয়ারি কীভাবে আশ্রয় দেয়? কীভাবে আপনারা একজন খুনিকে আশ্রয় দেন? যে খুনিটা ১৫ আগস্ট যখন আমার সেজো ফুফুর বাড়ি আক্রমণ করে সেখানে যে গ্রুপটা যায়, তার কমান্ডিং অফিসার ছিল ওই রাশেদ। সেই খুনি এখন পর্যন্ত আমেরিকায়। তাকে আজকে পর্যন্ত কেউই ফেরত দিল না। আমেরিকা গণতন্ত্রের জন্য কথা বলে আর খুনিদের আশ্রয় দেয়, প্রশ্রয় দেয়, কেন? আমি জানি না! তারা নাকি বিশ্বের সবচেয়ে গণতান্ত্রিক দেশ। আমি এতবার প্রত্যেক রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছি। বারবার তাদের অনুরোধ করেছি। আমরা বারবার চেষ্টা করেছি। কানাডায় মেজর নূর, সে ছিল ৩২ নম্বরে হত্যাকান্ডের জন্য কমান্ডিং অফিসার হিসেবে। আর ফারুক ছিল ট্যাংকের দায়িত্বে। আর নূর ঢুকেছিল, সেই ছিল কমান্ডিং অফিসার। অথচ নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে কানাডা। আর খুনি রাশেদ এখনো আমেরিকায়। তাদের কাছ থেকে আমাদের আইনের শাসনের সবকও শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথাও শুনতে হয়, ন্যায়বিচারের কথাও শুনতে হয়! সেটিই আমার কাছে খুব অবাক লাগে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিচার বিভাগের অধিকার-উন্নয়নের জন্য বা দেশের মানুষের জন্য কী করেছি, সেটা আর আমি এত বেশি বলতে চাই না। তবে আমি এটুকু বলব, যেহেতু আমার বাবা চাইতেন স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, আমরা সরকারে এসে সেই স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি। তিনি বলেন, আমরা কখনো বিচারকাজে হস্তক্ষেপ করিনি। এর আগে অনেক ঘটনা আছে, আপনারা জানেন। দেখা গেছে, ফলস সার্টিফিকেটের ব্যবহার বা ছাত্রদলের কাঁধে হাত রেখে কাকে কী রায় দেওয়া হবে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ রকম বহু ন্যক্কারজনক ঘটনাও বাংলাদেশে ঘটেছে। অন্তত আমি এটুকু বলতে পারি, আমরা সরকারে আসার পর সেটা করার সুযোগ নিইনি। সবসময় একটা ন্যায়ের পথে যেন সবাই চলতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সবসময় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে হবে। আমাদের দেশটাও যেমন বিশ্বে একটা মর্যাদা নিয়ে চলবে, সঙ্গে সঙ্গে একটি দেশের সব অঙ্গও যেন সেভাবে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে, আমরা সেটাই করতে চাই। সেভাবেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ বিচার পায় না। তাদের জন্য লিগাল এইড কমিটি ও আলাদা অর্থ বরাদ্দ করে বিচারের ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি। আইনগত সহায়তা ২০০০ সালে আমরা প্রণয়ন করি। অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে মাত্র হাতে গোনা সাতজনের বেশি বিচারক বসতে পারতেন না, এনেক্স ভবন করে দিয়েছি। ৪০টি চেম্বারের ব্যবস্থা করে দিলাম। পাশাপাশি প্রত্যেকটা জেলা কোর্ট নতুনভাবে গড়ে তোলা হলো। উচ্চ আদালতে নারী বিচারক নিয়োগে নিজের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে যে আইন ছিল সেখানে বিচার প্রক্রিয়ায় নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না। জাতির পিতা সেই আইন পরিবর্তন করে সুযোগ দিলেন। কিন্তু আমি এসে দেখলাম আমাদের উচ্চ আদালতে কোনো নারী নেই। আমি প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতিকে নারীদের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করলাম।

 

সর্বশেষ খবর