বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মত শক্তিশালী ইসির পক্ষে

গোলাম রাব্বানী

মত শক্তিশালী ইসির পক্ষে

আজ ৩০ ডিসেম্বর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) একাদশ সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি এই ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর পর দায়িত্ব নেবে নতুন নির্বাচন কমিশন। তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কমিশন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকায় আগামীতে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলেছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে দিন দিন মানুষ আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্য করতে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের বিকল্প নেই। এ জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন বিশ্লেষকরা। 

এদিকে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি। ইসি গঠনের জন্য দুই ধরনের চিন্তা করে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপ সফল হলে আগের মতোই সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন ইসি গঠন করা হবে। অন্যদিকে সংলাপে মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নিলে সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ইসি গঠনেরও চিন্তা রয়েছে সরকারের শীর্ষমহলে। দুই ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর। আইন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে এমন আভাসই মিলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রপতির সংলাপ চলছে। এরই মধ্যে যে সব দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে তাদের বেশির ভাগই সংবিধান অনুযায়ী আইন করার পক্ষে মত দিয়েছেন। অন্যদিকে জাতীয় পার্টিসহ ছোট দলগুলো সংলাপে গেলেও বিএনপি সংলাপে যাবে কি না সে বিষয়ে সরকারের শীর্ষপর্যায়ে সন্দেহ রয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার মানিকগঞ্জে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- এই সংলাপ অর্থহীন। বিএনপির মতো দল সংলাপে অংশ না নিলে তা যে অর্থবহ হবে না তা সবাই জানে। ফলে এই মুহূর্তে সরকারের হাতে আইনের মাধ্যমে ইসি গঠনের কোনো বিকল্প নেই।

সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি আজ : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি আজ। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে টানা তৃতীয় বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবেই দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে অর্থাৎ আওয়ামী লীগ ২৫৭টি আসনে বিজয়ী হয়। নির্বাচনে দেশের বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্বে মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটসহ নিবন্ধিত সর্বমোট ৩৯টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। ১ হাজার ৮৪৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, যার মধ্যে ১২৮ জন ছিলেন স্বতন্ত্র।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট ২৮১টি আসনে বিজয়ী হয়। জনগণ কর্তৃক নির্বাচনে ফের প্রত্যাখ্যাত হয় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপির পাঁচজনসহ ঐক্যফ্রন্ট মাত্র আটটি আসনে বিজয়ী হয়। স্বতন্ত্রসহ অন্যরা মোট ১১টি আসনে বিজয়ী হয়। দশম জাতীয় সংসদের মতো একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের মর্যাদা হারায় বিএনপি। ফের প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসে জাতীয় পার্টি। একাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় বর্ষপূর্তির দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। মূল দলের পাশাপাশি তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোও নানা কর্মসূচি নিয়ে সতর্ক অবস্থায় আজ মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কথা চিন্তা করে বড় ধরনের রাজনৈতিক শোডাউন কিংবা বড় জমায়েত বা মহাসমাবেশ কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে দলটি। এদিকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের দিনটিকে ‘কালো দিবস’ পালনের কথা বলেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি। দলটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, আওয়ামী দুঃশাসন অবসানে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

কলঙ্ক পড়ে আছে আলো নেই

ভোটে জনগণের আস্থা ফেরাতে হবে

সত্যিকার বিরোধী দল নেই

কেউ না এলেও ইসি গঠন থেমে থাকবে না : কাদের

সংলাপে অংশ নেবে না বিএনপি : ফখরুল

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর