শিরোনাম
রবিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
নাম নেই অস্ত্রধারী যুবলীগ কর্মীদের

পুলিশের মামলায় বিএনপির ৭ শতাধিক আসামি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে বৃহস্পতিবার বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলাকালে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারকারী অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা হয়নি। এমনকি হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে যে তিনটি মামলা হয়েছে তাতেও অস্ত্রধারীদের কোনো নাম নেই। মামলায় বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ প্রায় সাত শতাধিক কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অস্ত্রধারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের পক্ষ নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে, এ জন্য আগ্নেয়াস্ত্র অস্ত্রধারী চারজনই যুবলীগ কর্মী বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যুবলীগ নেতারা বলছেন, অস্ত্রধারীরা যুবলীগের সঙ্গে জড়িত না। তবে পুলিশ বলছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ডাকা সমাবেশে মিছিল নিয়ে আসার সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয়পক্ষে মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালীন চার যুবককে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সংঘর্ষে শহরের কলেজ রোড, ইলিয়ট ব্রিজ, ঢাকা রোড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৭০ নেতা-কর্মী আহত হন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র বলছে, লাল-কালো গেঞ্জি পরা যে যুবক আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলি ছুড়েছেন, তার বাড়ি শহরের দত্তবাড়ি মহল্লায়। তার নাম বায়েজীদ। কালো গেঞ্জি পরিহিত যে যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে তার বাড়ি শহরের কোলগয়লা মহল্লায়। তার নাম সুমন হোসেন। দুজনেই যুবলীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অন্য দুজনকে চিহ্নিত করা যায়নি। এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে একটি, উপপরিদর্শক (এসআই) আলীম হোসাইন বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে একটি এবং উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদ হাসান বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। অপরদিকে রেলওয়ে কলোনি মহল্লার আওয়ামী লীগ কর্মী উজ্জ্বল হোসেন বাদী হয়ে ৪০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা করেন। তবে এসব মামলায় অস্ত্রধারী কারও নাম নেই। এ ছাড়া থানায় তাদের নামে পৃথক কোনো মামলাও হয়নি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, অস্ত্রধারীরা যুবলীগের পক্ষ নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ওপর হামলা করেছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবহার করায় শহরবাসী আতঙ্কিত এবং স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল জানান, অস্ত্রধারীরা কেউ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তাদের আমরা চিনিই না। এমনকি যুবলীগের কোনো ওয়ার্ড কমিটিতেই তাদের নাম নেই।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা হয়নি। কেউ কোনো অভিযোগও দেয়নি। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে অস্ত্রধারীদের শনাক্ত করে মামলা ও গ্রেফতার করবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেফতার ৪ : সিরাজগঞ্জে গত ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জন, বিএনপি কর্মী রেজাউল ও ইমন বাশারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল সন্ধ্যায় শহরের বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জেলা পুলিশ গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ৩০ ডিসেম্বর সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর