রাজধানীর বনানী থানার মাদক মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হলো। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে এ অভিযোগ গঠন করে। এ মামলার অপর দুজন হলেন আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন। এদিন পরীমণিসহ তিন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী তাদের নির্দোষ দাবি করে অব্যাহতির আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেয়। একই সঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করে। এর আগে ১৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এ মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। এরপর মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ বদলির আদেশ দেয়। ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ১২ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি পাঠানো হয়। পরদিন ১৩ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণের জন্য এই দিন ধার্য করে। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, চিত্রনায়িকা পরীমণির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমণির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছর ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমণি বিভিন্ন স্থান থেকে এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমণি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন। ৪ আগস্ট অভিযান চালিয়ে পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয়। তার ড্রয়িংরুমের কাভার্ড, শোকেস, ডাইনিং রুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। পরদিন ৫ আগস্ট র‌্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমণি ও তার সহযোগী বিপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পরীমণিকে তিন দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত তাকে জামিন দেয়।