রবিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে পরিবারের অভিযোগ

হিমাংশুর কাছে চাওয়া হয়েছিল ১ লাখ টাকা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় পুলিশ হেফাজতে নিহত হিমাংশু (৩৫) বর্মণ ও তার বাবার কাছে ১ লাখ টাকা পুলিশ দাবি করেছিল বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। আর সেই টাকা দিতে না পারায় পুলিশ তাকে মেরে ফেলেছে বলে দাবি হিমাংশুর বাবা বিশে^শ্বর বর্মণের। তাই ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেছেন তিনি। একই দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসীও। গতকাল বিকালে হিমাংশুর বাবা ও এলাকাবাসী সাংবাদিকদের এমন কথা  বলেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরে হিমাংশুর স্ত্রী সাবিত্রী রানী ওরফে সবিতা রানী নিজ বাড়িতে খুন হয়েছেন বলে জানতে পারে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে হিমাংশুকে তার স্ত্রীর লাশের পাশে দেখতে পায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলমসহ একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে ওই লাশসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হিমাংশু ও তার বড় মেয়ে পিংকীকে (১৩) থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু সেই হিমাংশুই যে থানায় গিয়ে লাশ হবেন তা মেনে নিতে পারছে না এলাকাবাসী।

গ্রামবাসী বলছে, ‘পুলিশ দাবি করছে হিমাংশু আত্মহত্যা করেছেন! কিন্তু তিনি যদি আত্মহত্যা কিংবা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন তা বাড়িতেই করলেন না কেন? সুষ্ঠু তদন্ত হলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে বলে ধারণা তাদের। নিহতের বাবা বিশে^শ্বর বর্মণের ভাষ্য, শুক্রবার দুপুরে ছেলেকে থানায় দেখতে গেলে পুলিশ তার কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে পারলে ছেলে ও নাতনি পিংকীকে ছেড়ে দেওয়া হবে নতুবা তাদের জেলে পাঠানো হবে বলে উল্লেখ করেন বিশে^শ্বর বর্মণ।

তিনি আরও জানান, থানা থেকে ফেরার আগে ওইদিন বেলা দেড়টার দিকে হিমাংশুর সঙ্গে সবশেষ দেখা করেন। ওই সময় হিমাংশু তার বাবাকে বলেন, ‘বাবা! পুলিশ আমার কাছে ১ লাখ টাকা চেয়েছে। টাকা দিলে ছেড়ে দেবে, না দিলে আমাকে ও আমার মেয়েকে জেলে পাঠিয়ে দেবে।’ বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিশে^শ্বর বর্মণ। তবে টাকা চাওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবি করে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন, ‘হিমাংশু থানার কক্ষে থাকা ওয়াইফাইয়ের তার গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’ হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হিরণ¥য় বর্মণ বলেন, ‘শুক্রবার বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে পুলিশ হিমাংশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার গলায় একটি দাগ রয়েছে।’ এদিকে সাবিত্রী খুনে তার ভাই বাদী হয়ে পৃথক একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সর্বশেষ খবর