সোমবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

আপিল বিভাগে চার বিচারপতি নিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চারজন বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। গতকাল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে গতকাল সকালে এ তথ্য জানানো হয়। পরে নতুন নিয়োগ পাওয়া চার বিচারপতির মধ্যে তিনজনকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান করোনা আক্তান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় শপথ গ্রহণ করতে পারেননি। তিনি সুস্থ হওয়ার পর শপথ গ্রহণ করবেন বলে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জানানো হয়েছে। শপথ গ্রহণের পর বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের পরিচালনায় শপথ অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকরা উপস্থিত ছিলেন। নতুন চারজনকে নিয়ে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ আদালতে এখন বিচারকের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে আটজনে। আইন ও বিচার বিভাগ গতকাল তাদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তাদের এ নিয়োগ কার্যকর হবে।

নতুন নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে সবার আগে হাই কোর্টে নিয়োগ পেয়েছিলেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। ২০০৮ সালে তিনি হাই কোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে যোগ দেন এবং নিয়ম অনুযায়ী দুই বছর পর স্থায়ী হন। ১৯৫৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করা বোরহান উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি করেছেন। বিচারকের আসনে বসার আগে আইন পেশায় কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৮৫ সালে বার কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর জজ কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন বোরহান উদ্দিন। তিন বছর পর তিনি কোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং আপিল বিভাগে কাজ শুরু করেন ২০০২ সালে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ২০০৯ সালে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাই কোর্ট বিভাগে যোগ দেওয়ার পর ২০১১ সালে স্থায়ী হন। ১৯৬০ সালের ৮ নভেম্বর দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করা এম ইনায়েতুর রহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করার পর এলএলবি ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৮৬ সালে জজ কোর্টে অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিন বছর পর হাই কোর্ট বিভাগে এবং তারপর ২০০২ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন ইনায়েতুর রহিম। বিচারক হওয়ার আগে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। হাই কোর্টে বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৫ সালে। মাস্টার্স শেষ করে তিনি আইনের ডিগ্রি নেন এবং ১৯৮৬ সালে জজ কোর্টে অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরে ১৯৯৪ সালে হাই কোর্ট বিভাগে এবং ২০০৯ সালে আপিল বিভাগে তিনি আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। নাজমুল আহাসান হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান ২০১০ সালে। নিয়ম অনুযায়ী দুই বছরের মাথায় তার নিয়োগ স্থায়ী হয়। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের জন্ম ১৯৫৬ সালের ৩১ মে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে ১৯৮১ সালে তিনি মুন্সেফ হিসেবে বিচার বিভাগে যোগ দেন। জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান ১৯৯৮ সালে। পরে ২০১০ সালে কৃষ্ণা দেবনাথ হাই কোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১২ সালে তাকে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর