মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
করোনা ঠেকাতে ১১ বিধিনিষেধ

সমাবেশ নিষিদ্ধ, পরিবহনে অর্ধেক যাত্রী

♦ বাড়ি থেকে বের হলেই মাস্ক বাধ্যতামূলক ♦ রেস্তোরাঁয় খাওয়া ও আবাসিক হোটেলে থাকতে দেখাতে হবে টিকা সনদ, বিদেশ থেকে আগতদের টিকা সনদ থাকতে হবে, করতে হবে র‌্যাপিড টেস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

সমাবেশ নিষিদ্ধ, পরিবহনে অর্ধেক যাত্রী

দেশে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠার মধ্যে মানুষের চলাচলে চতুর্থবারের মতো বিধিনিষেধ দিল সরকার। এতে মোট ১১টি বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা। সামাজিক-রাজনৈতিক, কোনো জমায়েতই করা যাবে না। বিধিনিষেধে গণপরিবহনে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহন করতে বলা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়। আগামী ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর প্রথম, ২০২১ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে আরও দুই দফায় বাড়ানো হয় এই বিধিনিষেধ।

দেশে করোনা পরিস্থিতি কিছুদিন আগে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে দ্রুত অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির। বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গে এরই মধ্যে স্কুল বন্ধ করে দিয়ে রাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যুর পাশাপাশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে ২ হাজার ২৩১ জন নতুন রোগীর। রোগীর এই সংখ্যা গত ১০ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ।

১১ বিধিনিষেধ : এক. দোকান, শপিং মল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। দুই. অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে কোনো ব্যত্যয় রোধ করতে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। তিন. হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য করোনার টিকার সনদ প্রদর্শন করতে হবে। চার. ১২ বছরের বেশি সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পরে টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। পাঁচ. স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরসমূহে স্ক্রিনিং-এর সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টে থাকা ক্রুদের জাহাজের বাইরে আসা চলবে না। স্থলবন্দরগুলোতেও আসা ট্রাকের সঙ্গে কেবল চালক থাকবে। কোনো সহকারীকে পোর্টের বাইরে আসতে দেওয়া হবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে বিমানবন্দরে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ছয়. ট্রেন, বাস এবং লঞ্চ সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। চালক ও সহকারীদের করোনা প্রতিরোধী টিকা নিতে হবে। সাত. বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কভিড টিকা সনদ থাকতে হবে। দেশে এসেই তাদের র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে। আট. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরার বিষয়ে মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় সচেতন করবেন ইমামরা। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করবে। নয়. করোনার টিকা ও বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার এবং উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় তাদেরকে সহযোগিতা দেবে। দশ. পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশ বন্ধ থাকবে। এগারো. কোনো এলাকায় বিশেষ কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

সর্বশেষ খবর