মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

আগুনে সব পুড়ল ৩ হাজার রোহিঙ্গার

কক্সবাজার প্রতিনিধি

আগুনে সব পুড়ল ৩ হাজার রোহিঙ্গার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুড়ে ছাই ঘরের স্থানে শেষ সম্বল খুঁজতে দেখা যায় অনেককে -এএফপি

আগুনে সব হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে ৩ হাজার রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ১৬ নম্বর শফিউল্লাহ কাটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অগ্নিকান্ডে পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা বসতবাড়ি পুড়ে গেছে। এ ছাড়া আংশিক পুড়ে যাওয়াসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও তিন শতাধিক বসতবাড়ি। লার্নিং সেন্টার, স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং দেশি-বিদেশি সংস্থার বিভিন্ন স্থাপনাও আগুন থেকে রেহাই পায়নি। রোহিঙ্গা বসতি এবং বিভিন্ন স্থাপনায় থাকা সব ধরনের জিনিসপত্র পুরোপুরি ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকান্ডে সহায় সম্বল হারিয়ে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। অগ্নিকান্ডে প্রাথমিকভাবে ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

অগ্নিকান্ডের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও ও প্রশাসন সমন্বিতভাবে অনুসন্ধান করে ক্ষয়ক্ষতির এই চিত্র পেয়েছে। গতকাল ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পাঠানো এক লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১৬ নম্বর ক্যাম্পের চারটি ইউনিটে অগ্নিকান্ডে এ ক্ষতি হয়।

ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে ৮ নম্বর এপিবিএন-এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার খান জানিয়েছেন, ১৬ নম্বর ক্যাম্পের বি-ব্লকের আবু ছৈয়দের বাড়ি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আবু ছৈয়দের স্ত্রী লাকড়ি দিয়ে রান্না করতে গেলে ঘরের বেড়ায় আগুন লেগে যায়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে আর নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। রবিবার বিকাল ৫টার দিকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। উখিয়া, টেকনাফ ও কক্সবাজার থেকে ফায়ার সার্ভিসের আটটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা জানিয়েছেন, আগুনে পুড়ে ঘর হারা রোহিঙ্গাদের পাশর্^বর্তী লার্নিং সেন্টার, মাদরাসা, মক্তব, ওমেন ফ্রেন্ডলি স্পেস ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রাখা হয়েছে। এনজিও সংস্থাগুলো তাদের জরুরি খাবার সরবরাহ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের দ্রুত পুনর্বাসন করা হবে। তাদের শীতবস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হবে। কক্সবাজারে জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি কুতুপালংয়ে ১৬ নম্বর ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার ২০০ রোহিঙ্গাকে দিনে ২ বেলা রান্না করা খাবার সরবরাহ করছে। এ ছাড়াও ৩২৮টি পরিবারকে উচ্চ পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট সরবরাহ করা হয়েছে। গত এক বছরে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ পর্যন্ত তিনটি ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটল। গত বছরের ২২ মার্চ রাতে উখিয়ার ৮ ও ৯ নম্বর ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে প্রায় ১০ হাজার বসতি পুড়ে ৪৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১১ জন নিহত হন। গত ২ জানুয়ারি অগ্নিকান্ডে আইওএম পরিচালিত একটি করোনা হাসপাতাল ও তার পাশের কয়েকটি বসতি পুড়ে যায়।

সর্বশেষ খবর