বুধবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ইসলামিক ফ্রন্টের পাঁচ প্রস্তাব, সংলাপে যাচ্ছেন পার্থ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশন গঠন প্রশ্নে রাষ্ট্রপতির ডাকা সংলাপে অংশ নেবেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)। এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার পার্থ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সংলাপটা তো শুধু নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়েই হবে না। নির্বাচনকালীন সরকার থেকে শুরু করে সমগ্র নির্বাচন প্রক্রিয়াটা নিয়েই হতে পারে। কারণ ইসি নিয়ে তো এর আগেও দুটো সংলাপ হয়েছে। তাতে লাভ কী হয়েছে? কাজেই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সমগ্র প্রক্রিয়াটাতেই পরিবর্তন আনতে হবে। সব বিষয়েই আলোচনা হবে, যা সংলাপের পরই বিস্তারিত জানতে পারবেন।’

বিজেপি মহাসচিব আবদুল মতিন সউদ গতকাল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে যে সংলাপ ডেকেছেন তাতে আগামীকাল ১৩ জানুয়ারি রাত ৮টায় আমরা অংশ নেব। আমাদের দলের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার পার্থর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ সংলাপে অংশ নেবে।’ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে ২০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু হয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সংলাপে বসছেন রাষ্ট্রপতি। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতিকে পাঁচ প্রস্তাব ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের : নির্বাচন কমিশন গঠনে আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে পাঁচ প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। গতকাল সংগঠনের চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে সংলাপে অংশগ্রহণ করে এ প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবগুলো যথাক্রমে সংবিধান মোতাবেক একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, স্বয়ংসম্পূর্ণ, শক্তিশালী ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন। নির্বাচনের সার্বিক কর্মকান্ড সরকারের সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত ও নির্বাহী বিভাগের আওতামুক্ত রাখা। কমিশনের কাজের সুবিধার্থে প্রয়োজন মোতাবেক সামরিক, আধাসামরিক ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনী সরবরাহে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকা। নির্বাচন কমিশনের সব পরামর্শ-নির্দেশ রেডিও-টেলিভিশনসহ সব সম্প্রচার মিডিয়া কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে প্রচারে বাধ্য থাকা। এ-সংক্রান্ত আইনের একটি চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়নে অধ্যাদেশ আকারে জারি করে এটা বলবৎ করার পর তা সংসদে অনুমোদন করা। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্টের খাজা এনায়েত উল্লাহ, অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদীন জুবাইর, খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, মোশাররফ হোসেন হেলালী, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রিজভী, মুহাম্মদ শাহীদুল আলম রিজভী ও এম এম নাঈম উদ্দীন। সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী রাষ্ট্রপতিকে বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মধ্য দিয়েই জনমতের প্রতিফলন ঘটে। অথচ নির্বাচনের মতো এহেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেকটা আনুষ্ঠানিকতায় পর্যবসিত হয়েছে।

গোটা নির্বাচনব্যবস্থাই আজ সংকটাপন্ন। ফলে নির্বাচনী আমেজ-আবহ, ভাবগাম্ভীর্যতা ও উৎসবমুখরতা ক্রমে বিলুপ্তির দিকে। উপরন্তু এ ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে জনগণের আস্থার সংকট। এমনকি যার নেতিবাচক পরিণতিতে ক্রমাগত কেন্দ্রবিমুখ হয়ে পড়ছেন ভোটাররা, যা ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।

সর্বশেষ খবর