বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

লকডাউন কোনো সমাধান নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

লকডাউন কোনো সমাধান নয়

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, ‘লকডাউন কোনো সমাধান নয়। দেশে আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এমন অবস্থায় মহামারির তৃতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সবাইকে সরকার আরোপিত বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানাই।’ পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরিরও তাগিদ  দিয়েছেন তিনি। গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাবীব ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কাফি। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মহামারি প্রতিরোধে লকডাউন কোনো সমাধান নয়, বরং এতে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি। বর্তমানে দেশের রপ্তানি শিল্পে প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। আবারও লকডাউনের সিদ্ধান্ত এলে শিল্প খাতের ঘুরে দাঁড়ানো ব্যাহত হবে, যা অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যেসব দেশ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেসব দেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। তাই লকডাউন না দিয়ে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলাই এ মহামারি প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় দোকান মালিক ও অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের টিকা গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জসিম উদ্দিন বলেন, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলাদেশ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করা জরুরি। বিশ্ববাণিজ্যের ৯০ শতাংশই হয় ছয়টি ব্লকের মধ্যে। তাই রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি), ইউরোপীয় ইকোনমিক ইউনিয়ন, ইউএসএ, ইইউ, ইউকে ও আফ্রিকান কন্টিনেন্টাল ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট- এ ছয়টি ব্লকের সঙ্গে এফটিএ করা যেতে পারে। এলডিসি-উত্তর সময়ে দরকষাকষির জন্য বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে এফবিসিসিআই ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন খাতের গবেষণা ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এফবিসিসিআইর নিজস্ব গবেষণা সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন খাতের ১৮ জন বিশেষজ্ঞকে প্যানেল উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিশ্লেষণ ও মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন নীতি প্রণয়নে এফবিসিসিআই আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। উন্নয়নশীলে দেশে রুপান্তর-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ ও ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণ, গ্লোবাল মার্কেট অ্যাক্সেস ২০২১-২০২৬, টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগব্যবস্থা ও টেকসই রপ্তানি উন্নয়ন, ভর্তুকি ও প্রণোদনা শীর্ষক চারটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

ব্যবসায়ীদের এই শীর্ষ নেতা বলেন, সরকারের বিভিন্ন নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব বেসরকারি খাতের। কিন্তু এসব নীতি প্রণয়নের আগে সংশ্লিষ্ট খাতের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না। তাই বাস্তবায়নের সময় ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের নানামুখী সমস্যায় পড়তে হয়। তাই নীতি প্রণয়নের আগে খাত-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করার ও নীতির প্রভাব মূল্যায়নের আহ্বান জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর