বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

যুক্তরাজ্যে কেয়ার ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে প্রতারণার জাল

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যে ঘোষিত সম্ভাবনাময় কেয়ার ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে প্রতারণা শুরু হয়েছে। প্রায় ১৭ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত দরদাম করা হচ্ছে এই ভিসার জন্য! সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারক চক্র। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই ভিসার বাস্তবতা না বুঝেই অনেকটা ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। মাত্র ২৬৪ পাউন্ডে ব্রিটেনে আসার অপূর্ব সুযোগ-এমন একটি সংবাদ প্রচার হওয়ার পরই বাংলাদেশ থেকে আসতে ইচ্ছুক এবং ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষজন তাদের আত্মীয়স্বজনকে ব্রিটেনে আনার জন্য এই সুযোগ নিতে চান। ব্রিটেনে বাংলাদেশি কেয়ার অর্গানাইজেশনগুলোর মধ্যে শীর্ষ একটি প্রতিষ্ঠান আপাসেন বলছে, এই ভিসার বাস্তবতা ভিন্ন। আপাসেনের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান বলেন, এ ভিসায় আপাসেন এই মুহূর্তে লোক আনবে না। এর কারণ হচ্ছে, এই ভিসার বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশ থেকে লোক এনে যে বেতন দেওয়া হবে সেটা লোকাল স্টাফদের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। তারপর বাংলাদেশ থেকে একজন নন স্কিলড স্টাফ এনে এদের ফুল বেতন দিয়ে ৬ থেকে ৭ মাস ট্রেনিং দিয়ে ব্রিটেনে কাজ করার উপযোগী করা কেয়ার অর্গানাইজেশনের পক্ষে বহন করা বাস্তবসম্মত নয়। সেই সঙ্গে যাদের কেয়ার দিতে হয় তারা বেশির ভাগই ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাটাগরির মানুষ। বাংলাদেশ বা ইউরোপের বাইরে থেকে হঠাৎ করে এসে এদের কেয়ার দেওয়া সম্ভব নয়। কিংডম সলিসিটরের প্রিন্সিপাল ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী বলেন, হেলথ অ্যান্ড কেয়ার ওয়ার্কার ভিসা নিয়ে জালিয়াতি বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। মাত্র ২৬৪ পাউন্ড দিয়ে বিলেতে আসা যায় এরকম বোগাস খবর থেকে দূরে থাকতে হবে। স্পন্সরশিপ লাইসেন্স ছাড়া কেউ ব্যক্তিগতভাবে এই ভিসায়  আসতে পারবে না। এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া। সব ভিডিও বিশ্বাস করবেন না। কেউ কেউ ভিডিওর ভিউ বাড়াতে এবং কোনো আইনজীবী না জেনে অনেক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। যারা ওয়ার্ক পারমিট বিক্রি করে তারা আইনজীবী নন, দালাল। দালাল থেকে সাবধান থাকতে হবে।

এদিকে এই ভিসার ঘোষণা আসার পর থেকেই বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি কেয়ার অর্গানাইজেশনের নামে শোনা যাচ্ছে, যারা ১৭-১৮ লাখ টাকা চার্জ করে লোক আনার চিন্তা করছে। আপাসেনের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান বলেন, এই লেনদেনটাই তো অবৈধ! প্রতারণার শুরুটাই এখান থেকে। কোনো ভিসা টাকা দিয়ে কেনা ঠিক নয়। যদি কোনো কেয়ার অর্গানাইজেশন স্পন্সরশিপ লাইসেন্স সঠিক থাকে, যিনি আসবেন তিনি যদি স্কিল থাকেন তাহলে আসা নিয়ে সমস্যা নেই! কিন্তু যদি মধ্যখানে টাকার লেনদেন থাকে তাহলে সেটা স্রেফ প্রতারণা। তিনি বলেন, আমরা লোকাল রেসিডেন্টদের স্কিল করার দিকে জোর দিচ্ছি। অনেকেই এখন প্রফেশন পরিবর্তন করে কেয়ার প্রফেশনে আসতে চাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর