বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলায় কাওয়ালি আসর পণ্ড

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র-টিএসসিতে কাওয়ালি গানের অনুষ্ঠানে ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ আয়োজকদের। হামলায় আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদক জালাল আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রায়া জাহানসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী ‘লাঠিসোঁটা’ নিয়ে অনুষ্ঠানে হামলা চালায় এবং চেয়ার ভাঙচুর করে মঞ্চ গুঁড়িয়ে দেয়। ছাত্রলীগের উপ-দফতর সম্পাদক নাজির আহমেদ, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাব্বির হোসাইন শোভন, জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের কর্মী ফরিদ জামানসহ ছাত্রলীগের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী অনুষ্ঠানে হামলা চালান। হামলাকারীদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সমর্থক বলে জানা যায়।

গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় টিএসসির পায়রা চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাওয়ালি ব্যান্ড ‘সিলসিলা’ এবং একদল শিক্ষার্থীর যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যা রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলার কথা ছিল।

অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন রাকিব তনয় বলেন, সন্ধ্যায় আমরা অনুষ্ঠানে মাইক সেট করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন একদল ছেলে এসে অতর্কিত হামলা চালায়। মঞ্চ ভাঙচুর, চেয়ার দিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর,  শিক্ষার্থীদের কিল-ঘুসি এবং আয়োজকদের ধাওয়া করে টিএসসি থেকে বের করে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের আরেক উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মীর হুজায়ফা আল মামদুহ বলেন, সকালে যখন আমরা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন আমাদের বলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সেখানে অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করেছেন। তখন সাদ্দাম হোসেনকে ফোন করলে তিনি প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে আমাদের মাইক ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ছাড়া আমাদের নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, সন্ধ্যার দিকে আমরা জানতে পারি ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করবে এবং তারা মধুর ক্যান্টিনে লোক জড়ো করছে। পরে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা গায়কদের সরিয়ে নিই। এরপরই ছাত্রলীগ এসে অতর্কিত হামলা চালায়।

অভিযোগের বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ছাত্রলীগের হামলা করার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা জানতে পেরেছি, তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে গেছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রলীগের নামে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারা এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান করে কাওয়ালি গান গেয়ে ক্ষোভ জানান।

পরে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী তাদের উদ্দেশে বলেন, আমি তোমাদের অভিযোগ শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তথ্যপ্রমাণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর