দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ মনে করছেন, ক্যাম্পাসে সমাবেশ-জনসমাগম নিষিদ্ধের কারণ হিসেবে করোনা পরিস্থিতির উল্লেখ করা হলেও আসলে সিলেটের শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তপ্ত পরিস্থিতির ঢেউ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন না পড়ে, সে জন্য এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, ‘সম্প্রতি চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) এর সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং তাঁদের পরিবার-পরিজনদের সুরক্ষার স্বার্থে ১৮ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষাসমাপনী অনুষ্ঠান (র্যাগডে) এবং জনসমাগম হয় এরূপ অন্য কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে চবির কয়েকজন ছাত্রনেতা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভা-সমাবেশ ও জনসমাগম হঠাৎ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেটি রহস্যজনক। সিলেটের ঘটনার পর দেশের অন্য কোথায় নিষিদ্ধ হয়নি, চবিতে ঘোষণা করেছে। সিলেট শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তপ্ত পরিস্থিতির ঢেউ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন না পড়ে, সে জন্য এমন ঘোষণা হতে পারে বলে জানান তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান গণমাধ্যমে আরও বলেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ২৪১তম সভায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস-পরীক্ষা চলমান রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে প্রয়োজনে অনলাইনেও ক্লাস নিতে পারবে বিভাগগুলো। এ ছাড়া সরকারের নির্দেশনা পাওয়ার আগ পর্যন্ত আবাসিক হল ও শাটল ট্রেন স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে।অন্যদিকে চবির দাফতরিক প্রয়োজন ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। চবির সব ক্লাস, পরীক্ষা ও দাফতরিক কার্যক্রম যথারীতি চলমান থাকবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সবাইকে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতেও বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।