রবিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বাসায় নয়, আপাতত হাসপাতালেই থাকছেন খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাসায় নয়, আপাতত হাসপাতালেই থাকছেন খালেদা জিয়া

ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা না কাটা পর্যন্ত রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালেই থাকছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। স্থায়ীভাবে তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। গতকালও পরিপাকতন্ত্রে সামান্য পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে রিপোর্টে এসেছে। তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে আবারও সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলেও খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এখনই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত রাতে মেডিকেল বোর্ডের একাধিক চিকিৎসক এ তথ্য জানিয়েছেন। জানা গেছে, নতুন আরও কয়েকটি টেস্টও দেওয়া হয়েছে গতকাল। পাশাপাশি আরও এক সপ্তাহ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ শুরু হলে বাসায় রেখে সেটি বন্ধ করাটা একেবারেই অসম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত হলেই বাসায় নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এর মধ্যে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ম্যাডামের’ (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। এখন সামান্য স্থিতিশীল বলা যায়। কেবিনে স্থানান্তরের পর বড় ধরনের রক্তক্ষরণ হয়নি। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশে তাঁর সুচিকিৎসা হচ্ছে না। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, করোনা বাড়ছে। এ বিষয়ে চিকিৎসকরা অবগত আছেন। তবে তাঁদের সিদ্ধান্ত ছাড়া তো ‘ম্যাডামকে’ বাসায় নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, দেশে চিকিৎসা দিয়ে খালেদা জিয়াকে পরিপূর্ণভাবে সুস্থ করা সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর বিদেশ যাওয়াটা অপরিহার্য। মেডিকেল বোর্ডের অপর একজন সদস্য জানান, প্রথমবার ‘ম্যাডাম’ করোনা পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে হাসপাতাল থেকেই আবার তাঁর করোনা সংক্রমিত হয়। এজন্যই এবারও ভয় কাজ করছে। কারণ হাসপাতালে প্রচুর সংখ্যক কভিড রোগী আসা যাওয়া করছে। কেবিনেও নার্স, স্টাফ, আয়া, ক্লিনারসহ অনেকেই যাওয়া-আসা করছেন। তাদের যে কারও কাছ থেকেই সংক্রমিত হতে পারেন। মেডিকেল বোর্ডও এজন্যই বিএনপি প্রধানকে বাসায় রেখেই চিকিৎসার চিন্তা-ভাবনা করেছিল। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনো যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা আজ ভালো তো কাল খারাপ। সবচেয়ে ভয়ের কারণ এই রক্তক্ষরণ। যা গতকালও অল্প পরিমাণে হয়েছে। এটি কোনোভাবেই পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না। রক্তের হিমোগ্লোবিনও হরহামেশাই কমে যাচ্ছে। আবার সময় নিয়ে একটু বাড়ছে। এ ছাড়াও সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর ডায়েবেটিসও কখনো নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ইনসুলিন দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ‘ইলেক্টরাইল ইমব্যালেন্স’ অর্থাৎ খনিজে অসমতা দেখা দিচ্ছে মাঝেমধ্যে। শরীরও প্রচ  দুর্বল। রুচিও কমে যাচ্ছে। এজন্য কেবিনে রেখেই সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিসিইউর বেশির ভাগ সাপোর্টও কেবিনে রাখা হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর