রবিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
আজ উঠছে সংসদে

কী আছে নির্বাচন কমিশন আইনে

উবায়দুল্লাহ বাদল

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে বহুল আলোচিত খসড়া আইনটি জাতীয় সংসদের আজকের অধিবেশনে তোলা হচ্ছে। সংসদ সচিবালয় জানায়, বিলটি সংসদে উত্থাপনের জন্য আজ দিনের কার্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী মো. আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ নামে আইনটি বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করবেন।

জানা গেছে, ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এই আইন পাস করা হবে। এটি পাস হওয়ার পরেই নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেওয়া হবে।

প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ দেবেন। তাদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দিতে ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হবে। সার্চ কমিটিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক ও হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারক থাকবেন। এ ছাড়া কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল, পিএসসির চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক সার্চ কমিটির সদস্য থাকবেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটি গঠনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ জমা দিতে হবে। সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকেও নাম আহ্বান করতে পারবে। প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে দুটি করে নাম প্রস্তাব করতে পারবে সার্চ কমিটি। বিলে আরও প্রস্তাব করা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনাররা বাংলাদেশের নাগরিক এবং তাদের বয়স কমপক্ষে ৫০ বছর হতে হবে। তাদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধাসরকারি বা বেসরকারি পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এসব পদের জন্য যোগ্য হবেন না, যদি কেউ আদালতের মাধ্যমে অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত হন। দেউলিয়া ঘোষণার পর দেউলিয়া অবস্থা থেকে মুক্ত না হন। অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব অর্জন বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে কমপক্ষে দুই বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দন্ডিত হন। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় কোনো পদে থাকলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার হতে পারবেন না। নয়টি ধারা সংবলিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের প্রস্তাবিত বিলে বিগত সব ইসি গঠনের ভূতাপেক্ষ আইনি সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বলা হয়েছে, বিগত সব ইসি গঠনের বিষয়ে কোনো আদালতে প্রশ্নও তোলা যাবে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি এর আগে যত অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছেন এবং এসব কমিটি সম্পাদিত কার্যাবলি, এ ছাড়া অনুসন্ধান কমিটিগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলে গণ্য হবে। এ বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন আইনের উদ্দেশ্য পূরণে রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে সরকার প্রয়োজন মনে করলে বিধি প্রণয়ন করতে পারবে।

 

 

সর্বশেষ খবর