শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী

দুর্নীতির অভিযোগ অসত্য ভিত্তিহীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, চাঁদপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণ থেকে আমার পরিবারের সদস্যদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জমি অধিগ্রহণে পরিবারকে জড়িয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অসত্য, ভিত্তিহীন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এ কাজ করেছেন।  

গতকাল সন্ধ্যায় হেয়ার রোডের বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। দীপু মনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একটি অভিযোগ করেছেন যে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে সেটি ভাঙনপ্রবণ জায়গা। কিন্তু বেশকিছু বিবেচনায় এ জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি মহাসড়কের পাশে নয়। এ জমির পাশে স্থায়ী বাঁধ রয়েছে। বিভিন্ন দফতরের ছাড়পত্র নিয়েই এ জায়গা চূড়ান্ত করা হয়েছে। যখনই একটি বড় প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি একটি মহল বারবার নেতিবাচক প্রচারণা করে। এটিও একই পরিণতি হতে যাচ্ছে কি না- তিনি প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, অধিগ্রহণের জন্য প্রথমে যে প্রাক্কলন করা হয়েছিল সেই দাম ছিল অনেক বেশি। পরে যে প্রাক্কলন করা হয় সেখানে দাম কমে এসেছে। এ ছাড়া আমার ভাইকে জড়ানো হয়েছে সেখানে। অন্য রাজনৈতিক সহকর্মীদের জড়িয়ে বলা হয়েছে, এ জমি দিয়ে তারা লাভবান হবেন। আমার নির্বাচনী এলাকায় সবাই আমার রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। কেউ যখন জমি কেনেন আমাকে জিজ্ঞেস করে কেনেন না। এটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে একটি হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রম করতে কিছু জায়গা কেনেন। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয় তখন তিনি জমিটি বিক্রি করে দেন। মন্ত্রী বলেন, অধিগ্রহণের জন্য জমির মূল্য নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন। আমি শুনেছি, প্রথমে একটি প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়। সেই প্রাক্কলন অনুযায়ী ৬২ একরের দাম ছিল ৫৫৩ কোটি টাকা। এরপর তিন মাসের বেশি সময় এটি নিয়ে কিছু করা হয়নি। পরে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। আগের প্রাক্কলন কমিটিকেও বদলি করে দেওয়া হয়। পরে প্রাক্কলন করে বলা হয়, জমির দাম ১৯৩ কোটি টাকা। দুই ধরনের দর এসেছিল জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। আগের দাম তো এই দামের ২০ গুণ নয়। অথচ এমন বলা হয়েছে কোনো কোনো খবরে। দীপু মনি বলেন, রাজনৈতিক দলের প্রতিযোগিতা সব জায়গায় থাকে। আমার নির্বাচনী এলাকাতেও নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু প্রতিযোগিতা প্রতিহিংসায় রূপ নেওয়া রাজনীতির জন্য ভালো নয়। অবকাঠামোগত ষড়যন্ত্র হয়তো থেমে থাকতে পারে। কিন্তু চাঁদপুরবাসীর জন্য কোনো উন্নয়ন থেমে থাকবে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি হয়েছে কি না তা দেশের, রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টরা খতিয়ে দেখবেন আশা করি। কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ভাই ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদের লেখা একটি বক্তব্য বিতরণ করা হয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। বক্তব্যে, জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ বলেন, ২০২১ সালে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয় তার মধ্যে আমার জমিও পড়ে যায়। তখন আমি জমি বিক্রি করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেই। কারণ, সরকার জমি নিলে আমি আর্থিকভাবে লাভবান হবো। তা হওয়া উচিত নয়, হলে মানুষ আমাকে ভালোভাবে দেখবে না। পরে গত ৬ ডিসেম্বরে অফেরতযোগ্য দলিলের মাধ্যমে জমি হস্তান্তর করে দেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গায় আমার কোনো জমি নেই।

সর্বশেষ খবর