বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

চার জেলায় সংঘর্ষে দুজন নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, কুমিল্লার দেবিদ্বার ও মুরাদনগর, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ এবং মাদারীপুরে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুজন নিহত এবং আহত হয়েছেন অনেকে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- বগুড়া : সারিয়াকান্দিতে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ৮টায় পাকেরদহ বাজারে কাজলা ইউনিয়নের পাকেরদহ চরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী টিউবওয়েল মার্কার রফিকুল  প্রামাণিকের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মোরগ মার্কার সদস্য প্রার্থী রফিক শেখের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পাকেরদহ গ্রামের লাল মিয়া শেখের ছেলে বেলাল শেখ (৩৫) মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান। আহত হন পাকেরদহ গ্রামের তোফাজ্জল শেখের ছেলে শামজাহার শেখ (৩৬), তারিফউদ্দিন শেখের ছেলে তোফাজ্জল শেখ (৬০), তোতা শেখের ছেলে কাশেম শেখ (৩২) ও রফিক শেখের ছেলে মুকুল শেখ (৩০)। আহত তিনজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় জামালপুর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কুমিল্লা : কুমিল্লায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে নৌকার সমর্থকদের ওপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালালে সুরুজ মিয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের ইউসুফপুর ধানিস মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় ওই ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কবির হোসেন, সমর্থক খাইরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন রানাসহ পাঁচজন আহত হন। কবির হোসেন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজহারুল হক মামুন তার লোকজন নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন জানান, এ হামলার সঙ্গে তিনি বা তার কোনো সমর্থক জড়িত নয়। তারা নিজেরাই এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। নিজেদের গাড়ি নিজেরাই ভাঙচুর করেছে।  দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, উভয়পক্ষের মারামারির সময় নিচে পড়ে গিয়ে সুরুজ মিয়া নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। সুরুজ মিয়ার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। এদিকে মুুরাদনগর উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের গাংগেরকুট এলাকায় তিনজনকে পিটিয়ে জখম ও তিনটি  বাড়িসহ  দুটি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন সদ্য নির্বাচিত মেম্বার মাহবুব ও তার লোকজন। অভিযোগে জানা গেছে, ষষ্ঠ ধাপে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে মুরাদনগর উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে  মেম্বার পদে নির্বাচন করেন ফাতু মিয়া ও মাহবুব। নির্বাচনে মাহবুব জয়লাভ করেন। জয়ী হওয়ার পর তাকে ভোট না দেওয়ার অপরাধে মঙ্গলবার পলাশ, লালন ও নাহিদকে পিটিয়ে আহত করেন মাহবুব ও তার লোকজন।  নোয়াখালী : কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উল্যাকে (৬৫) মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুরে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাঁকড়া গ্রামের মরহুম দর্জি ওবায়দুল হকের বাড়িতে কুলখানি অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী বিএনপি নেতা আনছার উল্যাহ অভিযোগ করেন, তিনি দুপুরের দিকে বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমেরিকা প্রবাসী দর্জি ওবায়দুল হকের কুলখানি অনুষ্ঠানে যান। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জাও। এরপর তিনি তার দিকে এগিয়ে এসে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি শুরু করেন।  আনছার উল্যাহ বলেন, ‘একপর্যায়ে মির্জা আমাকে ভোটচোর বলে এলোপাতাড়ি থাপ্পড় মারেন।’  অভিযোগের বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার ফোনে সন্ধ্যায় ৭টার দিকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মাদারীপুর : সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ঘটকচর এলাকায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে দুটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন।

জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন জয়নাল মাতুব্বর ও রায়হান কবির। নির্বাচনে রায়হান কবির জয়লাভ করে। এই নির্বাচনে জয়নাল মাতুব্বরকে সমর্থন করেছিল ঘটকচর এলাকার তারা মোল্লা ও দুলু মোল্লা। এরই জের ধরে গত মঙ্গলবার বিকালে জয়নাল মোল্লার সমর্থক মিরাজ খানকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তবে এর আগে জয়নাল মাতুব্বরের সমর্থক মোল্লা ও দুলু মোল্লার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেন।

মাদারীপুর সদর থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ঘটনার পর পুলিশ এলাকা পরিদর্শন করেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থ্য গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর