সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য

------- রবার্ট ডিকসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেছেন, বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। একই সঙ্গে নির্বাচন ভয়মুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; কেননা বাংলাদেশ এলডিসি  থেকে উত্তরণ হয়ে উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাত্রা করছে। সে কারণে এখানে আগামীতে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়াটাও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, বিনিয়োগকারীদের জন্য। সবাই চাইবে, একটি স্থিতিশীল পরিবেশ। যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় একটি গণতান্ত্রিক সরকার চায়। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম সব দেশ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। বাংলাদেশে স্বচ্ছ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক, যুক্তরাজ্য এমনটাই চায়। এমনকি নির্বাচন যাতে ভয়মুক্ত পরিবেশে হতে পারে, এটাই প্রত্যাশা। ভালো দক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন হলে যুক্তরাজ্য খুশি হবে। যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব। বাংলাদেশ থেকে অনেক অপরাধী যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, এটা একটি আইনগত প্রক্রিয়ার বিষয়। এটা আদালতের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এক্ষেত্রে আদালত স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক সামনের পথ চলায় পাথেয় হয়ে অনুপ্রেরণা জোগাবে। সমস্যা সংকট একসঙ্গে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বিশ্বে শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাজ্য  থেকে বাংলাদেশ সি-১৩০ বিমান ক্রয় করেছে। নৌবাহিনীর সামরিক সরঞ্জামের জন্যও বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য থেকে সহযোগিতা নিচ্ছে। আগামীতে এই সহযোগিতা আরও বাড়বে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্য। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও  স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন আশা করছি আমরা। কিন্তু এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বেশি দায়িত্ব রয়েছে। এত দিনেও শরণার্থীদের  ফেরত পাঠানোর পরিবেশ তৈরি না হওয়া হতাশাজনক। এ ব্যাপারে আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্য নিবিড়ভাবে কাজ করে চলছে। মানবাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন আছে, এটা  যেমন ঠিক তেমনি এ নিয়ে আরও আলাপ-আলোচনার অবকাশ রয়েছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে মানবাধিকার রক্ষা স্পষ্ট করা হয়েছিল। এটা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এটা সব দেশের জন্যই চ্যালেঞ্জ। সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পায়, এ ব্যাপারে রাষ্ট্রযন্ত্রের আন্তরিকতা থাকতে হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সব সময়ই উদ্বেগের বিষয়। মানুষের গণতান্ত্রিক চর্চার উন্মুক্ত পরিবেশ দরকার। এটা দিতে হবে। যুক্তরাজ্য উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সবসময়ই অগ্রাধিকার দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকৃত মেধাবীরা যাতে আর্থিক সুবিধাসহ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পায় সেটা নিশ্চিত করা হবে।

সর্বশেষ খবর