শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বিশ্ববাসী পরিস্থিতি যেভাবে দেখছে

প্রতিদিন ডেস্ক

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর পরই উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। রাশিয়ার নিন্দায় সোচ্চার অধিকাংশ দেশ। একের পর এক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, ক্রীড়াবিদ, তারকারা রাশিয়ার হামলার নিন্দায় শামিল হয়েছেন। ইইউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছে। আমেরিকাও একই পথে হাঁটছে। পাশাপাশি চেষ্টা চলছে, রাশিয়া যাতে দ্রুত ইউক্রেন থেকে ফিরে আসে। তবে বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া একেবারে দায়সারা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রশমন করতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি তাদের মধ্যে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ফোন করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে।

ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাকে এই ফোন করতে বলেছিলেন। কারণ, পুতিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ফোন ধরছেন না। ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, তিনি সরাসরি কড়াভাবে খোলাখুলি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, অবিলম্বে হামলা থামাতে হবে। রাশিয়ার সেনাকে ইউক্রেন থেকে ফিরে আসতে হবে। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, এই ঘটনার ফলে ইউরোপের জীবন বদলে যাবে। এই হামলা ইউরোপের ইতিহাসে একটা টার্নিং পয়েন্ট।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, আমরা পুতিনকে ইউরোপের সুরক্ষা ছিন্নভিন্ন করতে দেব না। আমরা রাশিয়ার অর্থনীতির প্রধান ক্ষেত্রগুলোকে টার্গেট করব। তারা যাতে বাজার না পায় এবং প্রযুক্তি না পায়, সেটা নিশ্চিত করব। তাছাড়া আমরা ইইউতে রাশিয়ার সম্পদ ফ্রিজ করব এবং রাশিয়ার ব্যাংকগুলো যাতে এখানে কোনো কাজ করতে না পারে, সেটাও নিশ্চিত করব। জার্মানির চ্যান্সেলার শলৎস বলেছেন, কোনো কারণ ও যুক্তি ছাড়াই রাশিয়া এই হামলা করেছে। পুতিন বড় ভুল করলেন। রাশিয়াকে এর জন্য মূল্য দিতে হবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনের পাশে আছেন। তার বিশ্বাস, রাশিয়া কিছুতেই ইউক্রেন দখল করতে পারবে না। ইউক্রেন স্বাধীন থাকবে। পুতিনের এই বর্বরোচিত কাজ যাতে ব্যর্থ হয় তার জন্য কূটনৈতিক, আর্থিক, রাজনৈতিক এবং দরকার হলে সামরিক দিক থেকে চেষ্টা করব।

ইউক্রেনে সহিংসতা বন্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নরেন্দ্র মোদি কূটনৈতিক আলোচনা এবং সংলাপের পথে ফিরে আসার জন্য সব পক্ষ থেকে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে। ইউক্রেনে হামলা বন্ধের আহ্বান জানান নরেন্দ্র মোদি।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বৃহস্পতিবার বলেন, যুদ্ধে উসকানি দেওয়ার যে কোনো কাজের বিরোধিতা করে চীন। মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার আসেন হুয়া চুনিং। তিনি বলেন, যুদ্ধের উত্তেজনা না বাড়াতে সব পক্ষকে বোঝানোর পাশাপাশি উসকানি না দেওয়ার জন্য শুরু থেকেই বেইজিং দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে কমপক্ষে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ১ হাজার টন অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠিয়েছে। হুয়া চুনিং বলেন, এই উত্তেজনার জন্য যে দায়ী (কালপ্রিট), তার এখন ভেবে দেখা উচিত, অন্যদের দোষারোপ না করে কীভাবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে এই আগুন নেভানো যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তারাও রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন। তারা চান, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান হোক। জাপান জানিয়েছে, তারা পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাশিয়ার আগ্রাসনের মোকাবিলা করবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার হামলার জন্য ন্যাটোর উসকানিকেই দায়ী করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, এখন এই লড়াই শেষ করার জন্য রাজনৈতিক প্রয়াস নিতে হবে। ইসরায়েল বলেছে, তারা ইউক্রেন ছেড়ে আসা সব মানুষকে আশ্রয় দিতে তৈরি। তারা ইউক্রেনের মানুষের জন্য মানবিক সাহায্য করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর