সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

বান্দরবানে গুলিতে চারজন নিহত

দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সংঘর্ষ

অনিক ইসলাম, বান্দরবান

সন্ত্রাসী তান্ডবে আবারও রক্তাক্ত হলো পার্বত্য জেলা বান্দরবানের জনপদ। জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় দুই গ্রুপ সন্ত্রাসীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়ন এবং তারাছা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী মংবাতং এলাকার বাদাম খেত থেকে গতকাল বিকালে চারজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতদের পরনে ছিল কমব্যাট ইউনিফর্ম। স্থানীয়রা বলেছেন, মগ ন্যাশনাল লিবারেশন পার্টি (এমএনএলপি) সদস্যরা এ ধরনের পোশাক পরে থাকে।

এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালালে এক সেনা সদস্য নিহত হন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গুলি চালালে জেএসএস-এর তিন সদস্য নিহত হয়। এই ঘটনার প্রায় এক মাস পরই সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর নিজেদের মধ্যে বড় ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া গেল। বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আকতার জানান, সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ মংবাতং এলাকা থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করেছে। গতকাল সকালে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পুলিশ সুপার জানান, শনিবার বিকাল ও সন্ধ্যায় রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার মধ্যবর্তী পালংক্ষ্যং এলাকায় দুই গ্রুপ সন্ত্রাসীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় তারা নিহত হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে নিহতরা কোন গ্রুপের সদস্য এ বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

জেরিন আকতার জানান, বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে চারটি সশস্ত্র গ্রুপ পরস্পরের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। তাদের যে কোনো দুটি গ্রুপের মধ্যে এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের নোয়াপাড়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উনুমং মারমা নামের এক ক্যাডারকে গুলি করে এবং গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে অপহরণ করে ইঞ্জিন বোটে করে নিয়ে যাওয়ার সময় পালংক্ষ্যং এলাকায় ওতপেতে থাকা অন্য একটি সশস্ত্র গ্রুপের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ইঞ্জিন বোট থেকে নেমে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয় মগ পার্টির চারজন। গতকাল সকালে নদীর পাড়ে বাদাম খেতে তাদের উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। তখন তারা পুলিশকে খবর দেয়।

রোয়াংছড়ি থানার ওসি আবদুল মান্নান জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিম এবং পুলিশের দুটি টিম দুপুরের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ঘটনাস্থল থেকে লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তবে অপহৃত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উনুমং মারমার কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি বলে ওসি জানান। এদিকে তারাছা নোয়াপাড়া এবং মংবাতং এলাকায় দুটি গোলাগুলির ঘটনার পর আশপাশের জনপদগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর