শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

নিম্ন আয়ের দেশগুলো খাদ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে : বিশ্বব্যাংক

প্রতিদিন ডেস্ক

বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দারমিট গ্রিল বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে উচ্চমূল্যসহ নিম্ন আয়ের দেশগুলো মারাত্মক খাদ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে। এমনকি রেমিট্যান্সও কমে যাবে। এ ছাড়া বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটও তৈরি হবে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।

গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা জানান। এতে ইন্দারমিট গ্রিল আরও জানান, কিছু উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ খাদ্যের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার                মুষ্টিমেয় অর্থনীতির দেশে আমদানি করা গমের ৭৫ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করে দেশ দুটি। সংঘাতের কারণে এ দেশগুলো রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে শস্য এবং বীজ উৎপাদন আমদানি করতে পারছে না। খাদ্য পরিবহনও ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সরবরাহে ব্যাঘাতের পাশাপাশি খাদ্যের উচ্চমূল্য, ক্ষুধা ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কারণ হতে পারে।

খবরে বলা হয়, রাশিয়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের বাজারে একটি প্রধান শক্তি। এটি প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজারের এক-চতুর্থাংশ, কয়লার বাজারের ১৮ শতাংশ, প্লাটিনামের বাজারের ১৪ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেলের বাজারে ১১ শতাংশ অবদান রাখে। বর্তমানে এ পণ্যগুলোর সরবরাহে বিরাট প্রভাব পড়েছে। এটি বৈশ্বিক অর্থনীতির ব্যাপক প্রবৃদ্ধিও কমিয়ে  দেবে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশনা থেকে অনুমান করা হয়েছে যে, তেল-মূল্যের ১০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। এটা চলতে থাকলে পণ্য-আমদানিকারী উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে প্রবৃদ্ধি হতাশাজনকভাবে কমবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতসহ নানা কারণে এরই মধ্যে গত ছয় মাসে তেলের দাম ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। যদি এটি স্থায়ী হয় তবে চীন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কের মতো তেল আমদানিকারক  দেশগুলোতেও প্রবৃদ্ধি কমবে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ শতাংশ, তুরস্ক ২ থেকে ৩ শতাংশ এবং চীন ও ইন্দোনেশিয়ায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সংঘাতের কারণে  দেশগুলো প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে না। এ ছাড়া সংঘাত শুরু হওয়ার পর  থেকে ২০ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে বৃহত্তম গণ-অভিবাসন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার আশঙ্কা করছেন, খুব শিগগিরই শরণার্থীর সংখ্যা ৪০ লাখে উন্নীত হবে। বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর আকস্মিক আগমনকে মেনে নেওয়া আয়োজক সরকারের জন্য কঠিন। এটি জনসাধারণের অর্থায়ন ও পরিষেবা সরবরাহের ওপর চাপ সৃষ্টি করে- বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

খবরে আরও উল্লেখ করা হয়, অর্থনৈতিক মন্দা পূর্ব ইউরোপের বাইরের  দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যেসব দেশ প্রচুর পরিমাণে রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ মধ্য এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়া  থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল- কিছু ক্ষেত্রে এই  রেমিট্যান্স দেশের জিডিপির ১০ শতাংশের মতো। মধ্য এশিয়ার অনেক  দেশে সংঘাতের ফলে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর