সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

অতীতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়নি : সিইসি

সংলাপে আস্থার সংকট দূর করে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন চাইলেন শিক্ষাবিদরা, ইভিএম নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অতীতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়নি : সিইসি

কাজী হাবিবুল আউয়াল

সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। তারা বলেছেন, সবাইকে নির্বাচনে আনার জন্য রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন। আরপিও সংশোধন; নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা; আস্থা সংকট দূর করা এবং জনগণের মতামত ছাড়া সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। একই সঙ্গে ইভিএম নিয়ে টেকনোলজি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার পরামর্শ এসেছে সংলাপে। অতীতে নির্বাচন  পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক হয়নি; সমালোচনা হয়েছে বলে মন্তব্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের। সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। এ সংলাপে অন্তত ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। নানা কারণে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন না। বিকাল ৩টার পর নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক ডজন শিক্ষাবিদের পরামর্শ শোনেন নতুন ইসি। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের সঙ্গে বৈঠকে বসল নির্বাচন কমিশনাররা। সূচনা বক্তব্যে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ হচ্ছে জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জন নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। নির্বাচন বিভিন্ন কারণে হয়তো পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক হয়নি; সমালোচনা হয়েছে। আমরা চাই নির্বাচন যাতে আরও অধিক অংশগ্রহণমূলক হয়। সে লক্ষ্যে কমিশন সচেষ্ট থাকবে। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই সংলাপে অংশ নেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম আবুল কাশেম মজুমদার, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক লায়লুফার ইয়াসমীন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রো-ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার। সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমানসহ ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপে শিক্ষাবিদরা যা বললেন- সংলাপ শেষে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক করতে হলে নির্বাচন ইনক্লুসিভ হতে হবে। সবাইকে এখানে অংশগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা তা দেখছি না। সবাই নির্বাচনে আসছেন না এমন একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সবাইকে আনার জন্য সমঝোতা ব্যাপারটাতে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে টেকনোলজি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জাফর ইকবাল বলেন, ‘এটা টেকনোলজির ব্যাপার। টেকনোলজির শিক্ষকদের নিয়ে বসে বিষয়টা অ্যানালাইসিস করা যেতে পারে। এখন অনেক নতুন টেক এসেছে। যেমন ব্লক চেইন। এখানে এসব ব্যাপারগুলোকে একদম ফুলপ্রুফ করে দেওয়া হয়। ইভিএম নিয়ে সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মানুষের সঙ্গে বসতে হবে। ওনারা কনভিন্স হলে জাতিকে বলতে পারবেন, ইভিএম নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ।’

সংলাপে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেছেন, এখানে বলা হচ্ছে ইভিএম একটা হাই টেকনোলজির ব্যাপার। এটা আসলে হাই টেকনোলজি নয়; এটা লো টেকনোলজি। প্রবাসী কোটি বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার দেওয়ার উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দেন এ শিক্ষক। নির্বাচন পরবর্তী হিন্দু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের ওপর যেন সহিংসতা না হয়, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর থাকার তাগিদ  দেন তিনি।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে মানুষে দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘এনআইডি ভুল হয়ে গেলে শুনেছি ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। কীভাবে এটা হয় জানি না। নতুন প্রোগ্রাম নেন এবং নাগরিকদের দুর্ভোগ কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা করতে পারলে নাগরিকরা উপকৃত হবে। নতুন কমিশন এটা করলে পজেটিভ ইমেজ হবে। আপনারা যত যত্ন করেই কাজ করেন না কেন, আমি শিওর গালি খেতে হবে।

সংলাপ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিশন আমাদের থেকে কিছু হাম্বল সাজেশন জানতে চেয়েছিল। ওনারা একদমই শান্ত ছিলেন, আমরাই কথা বলেছি। আমাদের সাজেশন লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচন যেন স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক এবং অংশগ্রহণমূলক হয়- এ কথাই আমরা বলেছি। নির্বাচনে সহিংসতা যেন না হয়। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কীভাবে যুক্ত করা যায় সে কথা আমরা বলেছি।’

নারীর অংশগ্রহণের কথা বলেছি, জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ‘আরপিওতে আছে ৩৩ শতাংশ নারী থাকার কথা বিভিন্ন দলের কমিটিতে। কমিশন তা দেখবে বলেছে। এখনকার সিস্টেমে তো সবাই নিজ নিজ পদে থাকবেন। এমপিরা থাকবেন, মন্ত্রীরা থাকবেন, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। এটা রেখে আমরা কীভাবে একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করতে পারি তা আলোচনা করেছি।’ সংলাপে সাদেকা হালিম বলেন, এবারের নির্বাচন অত্যন্ত ক্রুসিয়াল হবে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। যারা সমালোচনা করছে তাদের স্পেস দিতে হবে, কমিশনও ধৈর্য ধরতে হবে।

সংলাপে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আনোয়ার হোসাইন বলেন, নির্বাচন কমিশনে আরও স্বাধীনভাবে যাতে কাজ করতে পারে এ জন্য আরপিওতে কিছু সংশোধনী করার প্রয়োজন আছে। ইভিএম নিয়ে ভালো-মন্দ আলোচনা হয়েছে। ইভিএম যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তাই ইভিএমকে আরও স্বচ্ছ-ভালো করার সুযোগ রয়েছে।

অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিষয়ে নজন দিতে হবে। বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে জেলা-উপজেলা নির্বাচন অফিসারদের অনেকেই ১৭/১৮ বছর ধরে এক পদে আছেন। তারা পদোন্নতি বঞ্চিত। এ রকম অবস্থায় আগামী নির্বাচনে তাদের নিয়ে কাজ করা কষ্টকর হবে। এ বিষয়ে ইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার বলেন, আপনারা যে পাঁচজন নির্বাচন কমিশনে এসেছেন। তারা লুকোচুরির মধ্য দিয়ে এসেছেন। ইসি নিয়োগের আগে চূড়ান্ত ১০ জনের তালিকা প্রকাশ করা উচিত ছিল। যখন আমরা বলতাম আপনারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এসেছেন। কিন্তু এখন আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি আপনারা লুকোচুরি, ছলচাতুরী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসেছেন। অতীতে অনেক সংলাপ হয়েছে। অনেক পরামর্শ এসেছে। কিন্তু সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচন করা আপনাদের জন্য টাফ অ্যান্ড টাফ হবে। দলীয় সরকারের অধীনে অঘোষিত ডিকটেশন ছাড়া নির্বাচন কমিশন কাজ করতে পারে না। তিনটি পরামর্শের কথা তুলে ধরে ইয়াহিয়া আখতার জানান, বিদ্যমান সিসটেমে ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়। দেশের ৩০০ আসনের একটিতেও ইভিএম ব্যবহার করবেন না। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে পদত্যাগ করে চলে যান। ইভিএম ব্যবহার বাদ দেওয়ার দাবি জানান এ শিক্ষক। তিনি বলেন, ইভিএম একটা হাইটেক মেশিন। এদেশের জনগণ প্রযুক্তি অচেতন, প্রযুক্তি জ্ঞান কম। এটা ব্যয়বহুল। এ মেশিনে কাগজের ব্যবহার নেই। হ্যাক প্রুভনেস প্রমাণ করুন। মানুষ না চাইলে ইভিএম নয়। ঝুঁকি না নিয়ে ইভিএম বাদ দিন। তিনি বলেন, প্রত্যেক জিনিসের একটা ওয়াক্ত আছে। ভোটের বাক্সেরও একটা খাবার সময় আছে, তা সকাল আটটা। কিন্তু লাস্ট ইলেকশনে কী হয়েছে, সে তো সাহরি খেয়েছে। সে ব্রেকফাস্ট খায়নি। এমন নির্বাচন করলে তো হবে না।

ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জরুরি।

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম বলেন, সব দল ও ভোটারকে নির্বাচনে নিয়ে আসাই চ্যালেঞ্জ। ইভিএম নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রো-ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান জানান, আস্থার সংকটে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। ভোটার বিমুখিতাও রয়েছে। ‘ক্রান্তিকালে’ দায়িত্ব নিয়েছে এ কমিশন। বিষয়গুলো মাথায় নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে, আস্থাও অর্জন করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ইসিকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখতে হবে। ক্ষমতাসীন দল আর প্রশাসনকে এক করা যাবে না। তিনি বলেন, ভারতে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এখানে সুষ্ঠু করা সম্ভব নয় কেন? প্রয়োজনে একাধিক দিনে ভোট গ্রহণ করার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লায়লুফার ইয়াসমীন বলেন, নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত ও কেন্দ্রে নিরাপদে আসার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান জানান, সবার আস্থা অর্জনে কমিশনকে কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ কমিশন হিসেবে কাজ দেখাতে হবে। যাচাই-বাছাই করে ইভিএম নাকি ব্যালটে ভোট করবেন তা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে ইসির কাজ দুরূহ হবে : সিইসি

আগামী সংসদ নির্বাচনের ভার নিয়ে দায়িত্ব শুরু করা সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দুরূহ হয়ে পড়বে। দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় গতকাল শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে এ কথা বলার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য তাদের লেখালেখির পরামর্শ দেন। সংলাপে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে রাজনৈতিক সমঝোতা এবং ইসির আস্থা অর্জনের ওপর জোর দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি বলেন, আমরাও আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি একমত, সমঝোতা লাগবে।

তিনি বলেন, ভালো ইলেকশন করাটা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। স্টেকহোল্ডার যারা আছেন, তারাও যদি সমভাবে না আসে...পলিটিক্যাল ক্লাইমেট, নির্বাচনে রাজনৈতিক আবহ অনুকূল না হয়, দলগুলোর মধ্যে মোটামুটি সমঝোতা না থাকে; পক্ষগুলো বিবদমান হয়ে যায়, তাহলে আমাদের পক্ষে ভালোভাবে নির্বাচন করাটা দুরূহ। রাজনৈতিক সমঝোতাটা গুরুত্বপূর্ণ। সমঝোতা হলে ইসির কাজ সহজ হবে, বলেন তিনি। নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির কোনো ইতিবাচক বক্তব্য না আসার প্রেক্ষাপটে হাবিবুল আউয়াল বলেন, কিছু কিছু রাজনৈতিক দলকে দেখছি, তারা কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশনকে আস্থায় নিচ্ছে না। সব দল না এলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতায় কিছুটা ‘ভাটা পড়ে যাবে’ মন্তব্য করে তিনি সবার আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হওয়ার কথা বলেন। শিক্ষাবিদদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা সহযোগিতা করবেন। দলগুলোকে এ বিষয়ে সচেতন করতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার বিষয়ে লেখালেখি চালিয়ে যেতে পারেন। নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সিইসি বলেন, ভালো নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ‘সদিচ্ছার অভাব হবে না’।

সময়ই বলবে কতটুকু পেরেছি : সিইসি

দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, আমন্ত্রিত অতিথিরা যে সব বক্তব্য দিয়েছেন তা শুনে গুরুত্বসহকারে নিয়ে লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে আলোচনা ও মূল্যায়ন করে কী করণীয় জানাব। আরও ভালো করার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টার কথা জানান তিনি। ‘কিছু দ্বিমত থাকবে। এবসলিউটলি সব কিছু সম্ভব নাও হতে পারে। আমরা চেষ্টা করব সামর্থ্য বাড়তে, আগামী নির্বাচনে দক্ষতাকে প্রয়োগ করে আরও সুন্দর, অবাধ করতে পারব। সবার সহযোগিতা লাগবে। উনারাও বলছেন, সমঝোতা লাগবে; সব দিক থেকে সহযোগিতা লাগবে।

সিইসি বলেন, কেউ বলেছেন ওই নির্বাচনটা কেয়ারটেকার আমলে হয়েছে, এখন সাংবিধানিক সরকার আছে। এর মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। দলীয় সরকার, নির্দলীয় সরকার- উনারা বক্তব্য দিয়েছেন, শুনেছি। সবাই এভাবে বলেন নির্দলীয় সরকার লাগবে। দুয়েকজন বলেছে। তিনি জানান, স্বীকার করেছেন রাজনৈতিক সমঝোতাটা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মধ্যে সমঝোতা থাকলে ইসির কাজ সহজ হবে, তাদের সহযোগিতায় দক্ষতার কাজ সুচারুভাবে করা যাবে। ইভিএম নিয়ে সবার মতামত পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে কমিশন নিজেরা বসে সিদ্ধান্ত হবে বলে আশ্বস্ত করেন সিইসি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর