বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

গোলাবর্ষণে জ্বলছে ইউক্রেন মানবেতর লাখো মানুষ

প্রতিদিন ডেস্ক

গোলাবর্ষণে জ্বলছে ইউক্রেন মানবেতর লাখো মানুষ

রাশিয়ান গোলার আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত ইউক্রেনের একটি হাসপাতাল -এএফপি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ২৮তম দিনে গতকাল ঘন ঘন গোলাবর্ষণে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এসব জায়গায় আটকে থাকা লাখ লাখ মানুষ ভয়াবহ মানবেতর জীবন পার করছেন। রাশিয়া এরই মধ্যে ইউক্রেনের ছোট-বড় ১০টি শহর দখল করে নিয়েছে। তবে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ, দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিউপোল, উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভে লড়াই চলছে। এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, অস্তিত্ব নিয়ে হুমকির মুখে পড়ামাত্রই রাশিয়া পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করবে। অন্যদিকে যে ইস্যু নিয়ে যুদ্ধ, সেই ‘ন্যাটো জোটে যোগ না দেওয়ার’ বিষয়ে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবার সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি গতকাল ইতালির সংসদে ভার্চুয়ালি ভাষণ দিতে গিয়ে অঙ্গীকার করেছেন, ‘ইউক্রেন ন্যাটো জোটে যোগ দেবে না।’ তিনি রুশ প্রেসিডেন্টকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন, আল জাজিরা, স্পুটনিক।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্রস্থল থেকে ২৫ মাইল পূর্বদিকের আরেকটি শহর বোরিস্পিলের আশপাশের এলাকায় যুদ্ধ চলছে। রুশ বাহিনী সেখানকার বাসিন্দাদের ওই অঞ্চল ছেড়ে যেতে বলেছে। কিয়েভের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি এখানেই রয়েছে। এ ছাড়া রুশ সীমান্ত থেকে ৩০ মাইল দূরের খারকিভ শহরে রুশ বাহিনী অবিরাম গোলাবর্ষণ করেছে। সেখানে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১০০০ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। অন্যদিকে এই প্রথমবারের মতো কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ইউক্রেনীয় বন্দর ওডেসার আবাসিক এলাকায় রুশদের নিক্ষিপ্ত গোলা এসে পড়েছে। সাগর থেকে রুশ নৌবাহিনী এ গোলাবর্ষণ করে। এদিকে মারিউপোল শহর এখনো ইউক্রেন বাহিনীর দখলে রয়েছে। তবে তাদের হটাতে রুশ বাহিনী অগ্রসর না হয়ে গোলা বর্ষণ করে যাচ্ছে। এতে শহরের বিভিন্ন স্থান জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে পরিণত হয়। এ অবস্থায় আশ্রয়স্থলে আটকে থাকা লাখো মানুষ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। যদিও রুশ বাহিনীর তরফ থেকে বলা হয়েছে, তারা মারিউপোল শহর থেকে আরও ৩ হাজার লোককে বের করে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু ইউক্রেন বাহিনী আরও লোকজনকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য আটকে রেখেছে। সূত্র জানায়, এর আগে গত সোমবার বিভিন্ন যুদ্ধ এলাকা থেকে মোট ৮ হাজার বেসামরিক লোককে বের করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। আটকে পড়া লোকজনকে মানবিক করিডোর দিয়ে বের করে নেওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের সঙ্গে ঐকমত্য হয়নি। আরেক খবরে বলা হয়েছে, মারিউপোল আত্মসমর্পণের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় গতকাল আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়ে বন্দর শহরটিতে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা। দুটি শক্তিশালী বোমাও নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখন সেখানে আটকে রয়েছেন প্রায় ৩ লাখ মানুষ।

ন্যাটো জোটে যোগ না দেওয়ার অঙ্গীকার জেলেনস্কির : ইতালির পার্লামেন্টে দেওয়া ভার্চুয়াল ভাষণে গতকাল ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে সরাসরি আলোচনায় বসার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অঙ্গীকার করেন, তিনি ন্যাটোতে যোগ দেবেন না। তিনি এর আগের রাতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ন্যাটো জোট রাশিয়াকে ভয় পায়।’ তিনি যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করে উল্লেখ করেন, ‘পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ছাড়া এই যুদ্ধের অবসান সম্ভব নয়। রাশিয়ার সঙ্গে যে কোনো শান্তি চুক্তির ওপর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, যাতে জনগণ এ বিষয়ে মতামত দিতে পারে।’

সর্বশেষ খবর