বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা
সেমিনারের ভাষণে স্পিকার

মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে মিয়ানমার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার সংরক্ষণে অঙ্গীকারবদ্ধ। মিয়ানমার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। আর বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটির অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘হিউম্যান রাইটস ইন দ্য টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি : রেটরিক অ্যান্ড রিয়েলিটি’ শীর্ষক হাইব্রিড সেমিনারে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসেডর কাজী ইমতিয়াজ হোসাইনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম। বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান সেমিনারে সূচনা বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে আরমা দত্ত এমপি, সিনিয়র হিউম্যান রাইটস এডভাইজর হুমা খান, প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান ও ইউএনএইচসিআর-এর সিনিয়র প্রটোকল অফিসার সুভাষ ওস্টি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।

স্পিকার বলেন, ১৯৭২ সালে বিশ্বসেরা সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র ১০ মাসের মাথায় বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, সেই সংবিধানে ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত সর্বজনীন মানবাধিকারের পুরোপুরি প্রতিফলন রয়েছে। তিনি বলেন, বেঁচে থাকার অধিকার, আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার, নারী-পুরুষের সমানাধিকার, শিশুদের অধিকার, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের অধিকার, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং কৃষক-শ্রমিকের উন্নয়নসহ সবকিছুই সন্নিবেশিত আছে বাংলাদেশের সংবিধানে। স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, যেখানে তাদের নিজ দেশে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অনেক সংগ্রাম করেছেন। এদেশের মানুষের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার সংগ্রাম বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯’ প্রণয়ন করা হয় এবং সে অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। সরকার ইতোমধ্যে কমিশনকে শক্তিশালী করতে কমিশনের জনবল ও বাজেট বরাদ্দ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্প, গুচ্ছগ্রামের মাধ্যমে ভূমি ও গৃহহীন অসহায় পরিবারের বসবাসের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনন্য দৃষ্টান্ত। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থায় মানবাধিকারের ক্ষেত্রটি বৈচিত্র্যময় ও সুবিস্তৃত হয়েছে। মানবাধিকারের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত, যা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। জন্মের পর থেকেই মানুষ মানবাধিকারগুলো অর্জন করে থাকে। প্রতিটি দেশের সরকারের দায়িত্ব মানবাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, টেকসই সামাজিক উন্নয়ন, মানবাধিকার যেন লঙ্ঘন না হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে। মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক শান্তি নীতি মেনে চলার মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীতে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা যাবে।

সর্বশেষ খবর