সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা
হঠাৎ অবনতি আইনশৃঙ্খলার

দেশ ছাড়ার আগে টিপুর খুনি বগুড়া থেকে গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশ ছাড়ার আগে টিপুর খুনি বগুড়া থেকে গ্রেফতার

আকাশ

ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান হত্যার মূল শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ। ঢাকা থেকে দুই বন্ধুকে নিয়ে একটি এলিয়ন গাড়িতে করে প্রথমে জয়পুরহাট যান সীমান্ত পার হওয়ার জন্য। তবে প্রথম দফায় ব্যর্থ হয়ে তারা বগুড়ায় ফিরে আসেন। মাসুমকে বগুড়ার একটি হোটেলে রেখে দুই বন্ধু ঢাকায় ফিরে আসেন। পরে বগুড়া থেকেই মাসুমকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ মতিঝিল বিভাগের একটি দল। ডিবি পুলিশের দাবি, টিপু ও সামিয়া খুনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে পিস্তল দিয়ে গুলি করা সেই ব্যক্তিই আকাশ। কেবল টাকার জন্য নয়, অন্য সুবিধা পাবেন এমন চুক্তিতেই এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, এই হত্যার জন্য পাঁচ দিন আগে মাসুমকে ভাড়া করা হয়। ঘটনার তিন দিন আগে কমলাপুরের ইনল্যান্ড ডিপো এলাকায় অপরিচিত এক ব্যক্তি এসে মাসুম ও তার সহযোগীকে একটি মোটরসাইকেল ও অস্ত্র দিয়ে যান। পরে এক সহযোগীসহ ২৩ মার্চ টিপুকে হত্যার চেষ্টাটি ব্যর্থ হয়। তবে পরদিন ২৪ মার্চ তাদের কিলিং মিশন সফল হয়। ‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে খুনি ভাড়া করে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যা করা হয় জানিয়ে এই ডিবি কর্মকর্তা বলেন, হত্যার ওপরের নির্দেশদাতা কে জানেন না হত্যাকারী নিজেও। তাই মাসুমকে কে ভাড়া করেছিল, কত টাকায় ভাড়া করেছিল, হত্যার মোটিভ কী- সেসব বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। শুধু টাকার জন্য নয়, এ হত্যাকান্ডে কোনো সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিষয়ও থাকতে পারে। হাফিজ আক্তার বলেন, ‘তিন-চারটা সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে আমরা এগোচ্ছি। নিশ্চিত না হয়ে মিডিয়ার সামনে এটা নিয়ে বলব না। তার (মাসুম) নামে মামলা আছে। সে বলেছে সে ফেরারি, চার-পাঁচটা মামলা আছে তার নামে, সেসব নিয়ে সে হতাশ ছিল। আমরা একটা মামলার তথ্য পেয়েছি। মামলার কারণে বাড়িঘরে যেতে পারে না, মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারে না সে। যারা তাকে আওয়ামী লীগ নেতাকে খুন করতে ভাড়া করেছিল, তারা বলেছিল, হত্যা করতে পারলে এসব মামলা থেকে সে রিলিজ পাবে।’

জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম বলেছে, ‘আমার টার্গেট ছিল টিপুকে হত্যা করা। তাই আমি অস্ত্রের ট্রিগার চেপে রেখেছিলাম। একাধারে গুলি বের হচ্ছিল। সামিয়াকে টার্গেট করে গুলি মারিনি। তার শরীরে যে গুলি লেগেছে তা আমি জানতাম না। হত্যার পরদিন টিভি দেখে জেনেছি। তাকে আমি গুলি করতেও যাইনি। আমার টার্গেট ছিল কেবল টিপু।’

কে এই মাসুম : মাসুম একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাফিকস ডিজাইনের ওপর পড়াশোনা করেন। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। তার বাবা একজন স্কুল শিক্ষক। ৬০/১৫ নম্বর পশ্চিম মাদারটেকের বাড়িতে সরেজমিন গেলে তার মা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘১৫ বছর ধরে তার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। কোথায় থাকে তা জানি না।’ কিশোর বয়স থেইে মাসুমের নানা অপরাধের জন্য তারা বিব্রত হতেন। একপর্যায়ে তিনি পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর