দুটি ব্যান্ডের নিলামে দেশের চার মোবাইল অপারেটর ১ হাজার ২৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১০ হাজার ৫৪৫ কোটি ৭০ হাজার টাকার তরঙ্গ কিনেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসির কাছ থেকে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ নিলাম শুরুর পর আধা ঘণ্টার মধ্যে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ এবং ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ১৯০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি হয়ে যায়। তবে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ৩০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ অবিক্রিতই থাকে।

দশ মেগাহার্টজের এক একটি ব্লক ধরে এ নিলামে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে ১০টি এবং ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে ১২টি ব্লকের ওপর ডাক দেওয়ার সুযোগ ছিল। প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ছিল ১৫ বছরের জন্য ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, তবে শেষ পর্যন্ত তা ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে। গ্রাহক সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের শীর্ষ দুই মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ৬০ মেগাহার্টজ করে ১২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনে নেয়। আর বাংলালিংক ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ৪০ মেগাহার্টজ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক একই ব্যান্ডের ৩০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কেনে। সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোনের হাতে এতদিন মোট ৪৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ছিল। নতুন তরঙ্গ মিলিয়ে তাদের হাতে মোট তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়াবে ১০৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ। তরঙ্গ মালিকানার দিক দিয়ে গ্রামীণফোনই দেশে শীর্ষে থাকবে। এ ছাড়া রবি ১০৪ মেগাহার্টজ, বাংলালিংক ৮০ মেগাহার্টজ এবং টেলিটক ৫৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারবে। দেশের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ তরঙ্গের নিলাম হলো, যেখানে ফোর জির পাশাপাশি ফাইভ জি নেটওয়ার্ক চালুর জন্য তরঙ্গ বিক্রি হলো।  বর্তমানে দেশে ফোর জি সেবা চালু রয়েছে। ফাইভ জি চালু হলে ইন্টারনেটের গতি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়ে কাজের গতিও বেড়ে যাবে।

পরে সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, আমরা ৮৬ শতাংশ বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছি। ২২০ মেগাহার্টজের মধ্যে ১৯০ মেগাহার্টজ বিক্রি হয়েছে। ৩০ মেগাহার্টজ আমাদের হাতে থেকে গেছে। আমরা প্রত্যাশার কাছাকাছি গিয়েছি। ফাইভ জি নেটওয়ার্ক বিস্তৃতির জন্য ছয় মাসের পরিবর্তে নয় মাসের সময় মোবাইল অপারেটরগুলোকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। বেতার তরঙ্গের মোট ক্রয়মূল্যের ১০ শতাংশ নিলামের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে এবং বাকি ৯০ শতাংশ নয় বছরে সমান কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবে অপারেটররা।