সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
টিপ পরায় নারীকে হেনস্তা

সংসদে প্রশ্ন সুবর্ণার ক্ষোভ প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদে প্রশ্ন সুবর্ণার ক্ষোভ প্রতিবাদ

কপালে টিপ পরায় রাজধানীতে এক শিক্ষককে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। দ্রুত তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে সংসদে। সংসদ সদস্য, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা গতকাল সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

সুবর্ণা বলেন, ‘দেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে একজন নারী টিপ পরতে পারবে না? এখানে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ এমনকি সে বিবাহিত না বিধবা সেটা বিষয় নয়। একটি মেয়ে টিপ পরেছে। তিনি একজন শিক্ষক। রিকশা থেকে নামার পর দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ইভ টিজিং করেছে।’ ওই ঘটনাকে দল-মত নির্বিশেষে, বিশেষ করে নারী সমাজের জন্য ‘ঘৃণিত ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি। টিপ পরায় পুলিশের হেনস্তার শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকার তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার গত শনিবার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার বাসা থেকে রিকশায় ফার্মগেইটের আনন্দ সিনেমার সামনে নামেন। সেখান থেকে হেঁটে তেজগাঁও কলেজে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। তখন সেজান পয়েন্টের সামনে থেমে থাকা একটি মোটরসাইকেলের উপর পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি বসেছিলেন। ওই মোটরসাইকেলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ওই ব্যক্তি তার কপালে টিপ পরা নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি। পেছনে ফিরে ঘটনার প্রতিবাদ করায় ফের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় শিক্ষক লতাকে। তাকে উদ্দেশ্য করে ‘টিপ পরছোস কেন’ মন্তব্য করেন ওই ব্যক্তি। প্রতিবাদ করলে পুলিশের ওই সদস্য মোটরসাইকেল চালিয়ে তার গায়ের উপর উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে জানান লতা। বিষয়টি নিয়ে সংসদে সুবর্ণা বলেন, ‘ইভ টিজিং আমরা শুনে এসেছি। বখাটে ছেলেরা স্কুলের মেয়েদের ইভ টিজিং করে। সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু আমি যখন দেশের আইনরক্ষাকারী কাউকে এ ভূমিকায় দেখি তখন সেটা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর। প্রতিবাদী হলে তার সঙ্গে তুই-তোকারি করা হয়েছে, অসম্মান করা হয়েছে। আমি সরকারি দলকে রিপ্রেজেন্ট করি, নাকি বিরোধী দলকে রিপ্রেজেন্ট করি- বিষয়টা এগুলোর ঊর্ধ্বে।’ সুবর্ণা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলেন, মানুষ আগে। মানুষের অধিকার আগে। জাতির পিতা বলেছেন, মানুষকে ভালোবাসতে হবে। মানুষের অধিকার আগে।’ কপালে টিপ পরা নিয়ে ওই শিক্ষককে হেনস্তার ঘটনায় এখনো কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। বেশ কিছু ভিডিও সংগ্রহ করা হলেও এখন পর্যন্ত ‘স্পষ্ট কিছু মেলে নি’ বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আদৌ পুলিশ সদস্য নাকি অন্য কেউ, সে বিষয়েও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

সর্বশেষ খবর