শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
সোহেল চৌধুরী হত্যা

আশীষকে গুলশান থানায় হস্তান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক

আশীষকে গুলশান থানায় হস্তান্তর

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় গ্রেফতার চার্জশিটভুক্ত আসামি আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রাতে র‌্যাব তাকে থানায় হস্তান্তর করে। আজ তাকে আদালতে তোলা হবে।

এদিকে র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর কানাডায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বোতল চৌধুরী। নিজের মিরপুরের বাসা ছেড়ে আত্মগোপনে ছিলেন গুলশানের পিংক সিটির পাশের ১০৭ নম্বর রোডের ২৫/বি নম্বর বাড়িতে। ৭ এপ্রিলের জন্য টিকিটও কনফার্ম করেছিলেন। তবে তার সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে র‌্যাব তাকে ওই বাসা থেকেই গ্রেফতার করে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে।

বোতল চৌধুরী গ্রেফতারের বিষয়ে গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে গণমাধ্যমকর্মীদের আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাগ্বিতন্ডা হয়। এর জেরেই সোহেলকে হত্যার জন্য আজিজ মোহাম্মদ ভাই তৎকালীন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনকে দায়িত্ব দেন। ১৮ ডিসেম্বর রাতে বনানী ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে ইমন গ্যাংই হত্যা করে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে। ওই ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৫৯)।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা কারণ পর্যালোচনা করে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের অনৈতিক কার্যক্রম ও উচ্চশব্দে গান-বাজনার বিষয়ে প্রতিবাদ করেছিল ক্লাব লাগোয়া বনানী মসজিদ কমিটি। তবে এর নেপথ্য মদদদাতা মনে করা হয়েছিল চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে। ওই ঘটনায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে বাগ্বিতন্ডাও হয় সোহেলের। প্রকাশ্যে আজিজ ভাইকে অপমান করাই কাল হয় সোহেল চৌধুরীর।

পলাতক আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল : চাঞ্চল্যকর এই মামলায় ফারুক আব্বাসী, হারুনুর রশিদ ওরফে লেদার লিটন, সানজিদুল ইসলাম ইমন ও তারেক সাঈদের পর গ্রেফতার হলেন বোতল চৌধুরী। বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন চারজন। তাদের মধ্যে কানাডায় রয়েছেন আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, থাইল্যান্ডে আজিজ মোহাম্মদ ভাই, মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখিয়ে আমেরিকায় পালিয়ে গেছেন আদনান সিদ্দিকী ও ব্যবসায়ী সেলিম খান। পলাতক সবার সঙ্গেই বোতল চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব। র‌্যাব সূত্র বলছে, আশীষ রায় ওরফে বোতল চৌধুরী অসংখ্যবার বিদেশে গেছেন। তিনি কানাডায় চার-পাঁচ বছর ছিলেন।

 দেশটির নাগরিক তিনি। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে মিরপুরে বাস করছিলেন। ২৮ মার্চ তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। ৭ এপ্রিল কানাডায় যাওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন। এ জন্য নিজের বাসা ছেড়ে গুলশানে একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন, যেটি একটি পাঁচ তারকা হোটেলের এমডি ভাড়া করে দিয়েছিলেন। সেখানে থেকে কানাডায় যেতে তিনি একটি এয়ারলাইন্সের টিকিটও কাটেন। যদিও পালানোর আগেই তিনি গ্রেফতার হলেন তিনি।

এ মামলায় ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশ নয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২০০১ সালে ৩০ নভেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে মামলাটি বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলার অন্যতম আসামি আদনান সিদ্দিকী দুই বছর পর হাই কোর্টে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। পরে হাই কোর্ট ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট পুনরায় আরেকটি রায় দেন। এ রায়ে আগের জারি করা রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রত্যাহার করা হয় হাই কোর্ট এর স্থগিতাদেশ। মামলাটি পুনরায় প্রাণ ফিরে পায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর