শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব

ভাঙ্গায় দুজনকে কুপিয়ে হত্যা

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দী গ্রামে স্থানীয় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে জান্দী গ্রামের ভাঙ্গার নওপাড়া থেকে তুজারপুরের উত্তর বাজারগামী আঞ্চলিক সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজনের একজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। তার নাম সলেমান শরিফ (৩৫)। তিনি জান্দী গ্রামের মৃত গোপাল শরিফের ছেলে। সলেমান বিবাহিত এবং দুই মেয়ের বাবা। নিহত অপরজনের নাম কামরুল মাতুব্বর (৩২)। গুরুতর অবস্থায় ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে  ১২টার দিকে মারা যান তিনি। তিনি একই গ্রামের মৃত কামাল মাতুব্বরের ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং তার ১৮ বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। হামলার ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলের চালক আমীরুল মাতুব্বর (৪০)। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মনিরউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে। তাকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।  নিহত কামরুলের চাচা ও ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে স্থানীয় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন নিহত কামরুল মাতুব্বর এবং আরেক পক্ষের নেতৃত্ব দেন একই গ্রামের বাসিন্দা রুহুল মাতুব্বরের ছেলে জামাল মাতুব্বর (৪০)। কামরুলের বাবা মৃত কালাম মাতুব্বর আগে ওই এলাকার নেতৃত্ব দিতেন। তার মৃত্যুর পর জামাল নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেন। এ বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি কামরুল। পরে কামরুল নিজে নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেন।

গত বুধবার জামাল মাতুব্বরের সমর্থক শহীদ ব্যাপারি, নজরুল মোল্লা, টেপু মোল্লাসহ ১০/১২ জন কামরুলের দলে যোগ দেন। এ উপলক্ষে ওইদিন শহীদ ব্যাপারির বাড়িতে এক ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে গত বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় পোদ্দার বাজারে কামরুলের সঙ্গে জামালের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে কামরুল বাড়িতে চলে যান। রাত ৮টার দিকে কামরুল আবার পোদ্দার বাজারে আসেন। তারাবি নামাজের পর মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে প্রতিপক্ষের ১৫/২০ জন লোক তাদের ওপর হামলা করে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহসীনউদ্দিন ফকির জানান, আহত কামরুল মাতুব্বরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফরিদপুরে রেফার করেন। পরবর্তীতে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকায় রেফার করা হয়। ঢাকা নেওয়ার পথে নবীনগর এলাকায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন, কীভাবে কী ঘটনা ঘটেছে তার খবর নিচ্ছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে একজন এবং ঢাকা নেওয়ার পথে আরেকজন মারা গেছেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর