শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

পাকিস্তান আর্মি যেন হঠাৎ করেই ‘গুডবয়’ হয়েছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

পাকিস্তান আর্মি যেন হঠাৎ করেই ‘গুডবয়’ হয়েছে

প্রবীণ কূটনীতিক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমানের মতে, সাধারণত পাকিস্তান সেনাবাহিনী যেদিকে যায় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তও সেদিকে যায়। কিন্তু এবারের বিষয়টি অন্যরকম। বরং সেনাবাহিনী প্রধান প্রকাশ্যেই বললেন সিদ্ধান্ত হতে হবে রাজনৈতিকভাবে। সবমিলিয়ে পাকিস্তান আর্মি যেন হঠাৎ করেই গুড বয় হয়ে গেল। এখন প্রশ্ন হলো, আসলেই কী সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের বাইরেই ক্ষমতার পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। আসলে তা নয়, যা হচ্ছে তা সেনাবাহিনীর ছত্রছায়াতেই হচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। জানা যায়, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সে দেশের জাতীয় পরিষদকে বহাল করে এক রায় দিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে এক অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই রায়ে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের আনা অনাস্থা প্রস্তাবটি খারিজ করে জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বেআইনি কাজ করেছেন এবং এতে পাকিস্তানের সংবিধানের ৯৫ ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে। প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের এক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় দেয়। আদালত একই সঙ্গে  শনিবার (আজ) স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে দশটার সময় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসার নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি তার রায়ে বলেছেন, এই ভোটটি শনিবার হতেই হবে, কোনো কারণ দেখিয়ে এই অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমানের মতে, পাকিস্তান আর্মি এখানে গুড বয়ের মতো হয়ে যাওয়া পেছনে কারণ আছে। গত তিন বছরে পাকিস্তানের জনগণ ইমরানকে ক্ষমতায় আনার জন্য আর্মিকে দায়ী করেছে। ২০১৮ সালে পাকিস্তানের আইএসআইয়ের প্রধান সৈয়দ হামিদ এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছিলেন।

আর ইমরান খানে গত তিন বছরের কর্মকান্ডই ছিল দেশের স্বার্থের বিপরীতে। পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। পাকিস্তানে চীনের প্রজেক্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ইমরান খান ব্যর্থ হয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে আর্মি এবার ইমরান খানকে ধন্যবাদ দিয়ে তার সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছে। ফলে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল বলা যায়। ওয়ালিউর রহমান বলেন, আজ সকালে এই অধিবেশনের দিকেই এখন সবার দৃষ্টি থাকবে। মনে হচ্ছে বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর অনাস্থা ভোট করে তাকে পরাজিত করবে। পরে পরবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন। আশাকরি এসব প্রক্রিয়া কোনো রকমের বড়ধরনের সহিংসতা ও  হেরফের ছাড়াই অনুষ্ঠিত হবে। কোনো ধরনের সেনাশাসনের মধ্যে পাকিস্তানকে যেতে হবে না।

সর্বশেষ খবর