শিরোনাম
সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

পুলিশ জনগণের সেবক হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশ জনগণের সেবক হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুলিশ জনগণের সেবক হবে, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করবে। পুলিশের কাছে গেলে ন্যায়বিচার পাবে বা একটা ন্যায্যতা পাবে এই আত্মবিশ্বাসটা যেন মানুষের মধ্যে সবসময় থাকে। পুলিশকে সেই সেবাই দিয়ে যেতে হবে।

গতকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে ‘দেশের ৬৫৯টি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবায় স্থাপিত সার্ভিস ডেস্কের উদ্বোধন এবং গৃহহীনদের জন্য নির্মিত গৃহ হস্তান্তর’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামের এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে কোনো বাহিনী ও ব্যক্তির জীবনে সফলতা তখনই আসে, যখন তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা অর্জন করতে পারে। বাংলাদেশ পুলিশ যাতে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারে, এটাই আমরা চাই। নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবায় স্থাপিত পুলিশের সার্ভিস ডেস্কের প্রশংসা করে বলেন, আমাদের নারী সমাজ, শিশু বা বয়স্করা, তাদের বিরুদ্ধে অন্যায় হলে বলতে পারে না। নারীদের ব্যাপারে তো এটা আরও বেশি। তাদের পক্ষে অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়ার সুযোগটা আপনারা করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা সমাজটাকে উন্নত করতে চাই। যারা পিছিয়ে পড়া, অনগ্রসর, তৃণমূল পর্যায়ে পড়ে থাকে বা যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের অবাঞ্ছিত মনে করে, শত নির্যাতনের মুখেও প্রতিকার চাইতে পারে না, সেই মানুষের মধ্যে আস্থা-বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে চাই। নাগরিক অধিকার রয়েছে, সেটা নিশ্চিত করতে চাই, তাদের সহযোগিতা করতে চাই।  সেবা প্রার্থীদের আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সরকারের উন্নয়নের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন সরকার প্রধান। বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে উন্নয়নটা তৃণমূল থেকেই শুরু করেছি। শুধু রাজধানী কিংবা শহরভিত্তিক নয়, সর্বস্তরের মানুষ যেন উন্নয়নের ছোঁয়াটা পায়, সেটা লক্ষ্য রেখে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন ও ঠিকানাবিহীন থাকবে না। প্রথমবার সরকারে এসে বলেছিলাম, কোনো কুঁড়েঘর থাকবে না, আমরা একটা টিনের ঘর হলেও দেব। দ্বিতীয়বার সরকারে এসে সেমি পাকা ঘর দিচ্ছি এবং উন্নতমানের জীবনযাপন যেন করতে পারে তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তিনি বলেন, উন্নয়নটা গতিশীল হবে। মানুষের যখন থাকার জায়গা হয়, তখন তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। এতে মানুষের ভিতরে আত্মবিশ্বাস ও আস্থা সৃষ্টি হয়। সেটা তাকে সুযোগ করে দেয় নিজের পায়ে দাঁড়ানোর, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করার। পুলিশকে প্রযুক্তিগতভাবে যুগোপযোগী করতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে যাচ্ছে। কাজেই এখন যোগাযোগের সুযোগ অনেক বেশি। তাই যে কোনো জায়গায় বসে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা জানা বা কোনো নির্যাতন করলে তার প্রতিকার করার সুযোগ আছে। পুলিশের ৯৯৯ সেবার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কোনো দুর্গত এলাকায় কেউ পথ হারিয়ে ফেললে, তাকেও পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসছে। করোনাকালে পুলিশের কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন সরকার প্রধান। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, তা সমুন্নত করে মানুষের সেবা দেওয়াটাই দায়িত্ব। প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, যারা পুলিশের হেল্প ডেস্কে কাজ করেন তাদের শুধু দেশে নয়, বিদেশেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেব। তারা যেন বিদেশ থেকেও প্রশিক্ষণ নিয়ে আসতে পারে। কারণ কোন দেশে, কীভাবে এটাতে মানবিক দিক ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয় রয়েছে, সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের প্রয়োজন রয়েছে। তাই এখানে কাউকে বিদেশে পাঠিয়েও যদি ট্রেনিং করিয়ে আনতে হয়, সেটা করাব এবং তারা অন্যদের ট্রেনিং করাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুপ্রশিক্ষিত একটা বাহিনী, যে বাহিনী মানুষের পাশে থাকবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। সেটাই আমরা চাই। সেইভাবে আমরা গড়ে তুলব। পুলিশকে জনগণের পুলিশ হতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্ধৃতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি হেল্প ডেস্ক নির্মাণের মাধ্যমে নারী, বয়স্ক, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের সেবা দান করা এবং গৃহহীনদের গৃহ দেওয়া, এটা জনগণের পুলিশেরই কাজ। আজকের পুলিশ জনগণের পুলিশ হিসেবেই মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জনগণের পাশে থাকবেন। জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবেন। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর পুলিশ বাহিনীর জন্য যত রকমের সুযোগ সুবিধা দরকার, সেটা করেছি। বিশেষায়িত বাহিনী গড়ে তুলছি। এর মাধ্যমে সেবাটা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে নেওয়ার চেষ্টা করছি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর