রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

এ যুদ্ধ সহসা থামবে না

জিন্নাতুন নূর

এ যুদ্ধ সহসা থামবে না

মে. জে. (অব.) আবদুর রশীদ

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ সহসা থামবে বলে মনে হচ্ছে না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এ যুদ্ধ শুরু করেছেন। যে রাজনৈতিক ও সামরিক লক্ষ্য নিয়ে রাশিয়া এ যুদ্ধ শুরু করেছে তা এখনো অর্জিত হয়নি। এ লক্ষ্য অর্জিত না হওয়ার ফলে পুতিনের পক্ষে এ মুহূর্তে যুদ্ধ থেকে সরে আসা দুষ্কর। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এ যুদ্ধে রাশিয়া কোনো বিজয় দেখেনি। সেখানে ইউক্রেন থেকে বেরিয়ে আসতে হলে রাশিয়ার একটি বিজয়কে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। এ বিজয়কে সংজ্ঞায়িত করার জন্য রাশিয়ার যে সামরিক কৌশল ছিল তা ভুল ছিল। এ কারণে রাশিয়ার মতো বড় একটি বাহিনী ইউক্রেনের মতো ছোট সামরিক বাহিনীর কাছে পরাজিত হচ্ছে। আবদুর রশীদ বলেন, সামরিক দিক দিয়ে চিন্তা করলে সামরিক যুদ্ধবিদ্যার কৌশল নিয়ে প্রশ্ন এসেছে কীভাবে আগামী দিনে যুদ্ধ পরিচালিত হবে। আগে বড় শক্তিগুলো তাদের সামরিক সরঞ্জাম এবং সামরিক শক্তির যে প্রভাব তা থেকে সব সময় নিজেদের বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে কিন্তু এখন তা পারছে না। সে ক্ষেত্রে যারা যুদ্ধ করতে চায় তাদের সামরিক যুদ্ধবিদ্যার এ কৌশল নতুন করে বিনির্মাণ করতে হবে। স্বভাবতই এখন বিজয়কে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আগে রাশিয়া অনেক দিক থেকে একসঙ্গে আক্রমণ করার চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সেখানে সে আক্রমণের বাহিনীগুলোকে লজিস্টিক সমর্থন দিতে রাশিয়া ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য এখন রাশিয়া চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয়ভাবে এক রাস্তার মধ্য দিয়ে অল্প জায়গার ভিতরে অপারেশন করে জয়লাভ করতে। সে উদ্দেশ্যেই আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি যে ইউক্রেনের রাশিয়ান সমর্থিত এলাকা (দনবাসে) যে বিচ্ছন্নতাবাদীরা আছে তারা রাশিয়ার সমর্থকগোষ্ঠী। রাশিয়া চেষ্টা করবে ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের সঙ্গে যে সংযোগ রয়েছে সেটি বিচ্ছিন্ন করে এ দনবাসকে বড় করার। সে ক্ষেত্রে এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে যুদ্ধটা কৃষ্ণ সাগরের পাড় দিয়েই ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়ার মূল লক্ষ্য হচ্ছে- সে জায়গায় ইউক্রেনের একটি বড় বাণিজ্যিক পোর্ট আছে তা দখল করার। তাহলে রাশিয়া একটি সংজ্ঞায়িত বিজয় ঘোষণা করতে পারে। রাশিয়া স্বভাবতই এখন সে প্রচেষ্টা করছে।

এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, আমরা দেখেছি যে রাজনৈতিকভাবে রাশিয়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিঃসন্দেহে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ন্যাটো সমর্থকরা রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে পেরেছে। এ ছাড়া রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ধীরে ধীরে দেশটি তা অনুভব করতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রাশিয়া কাউন্টার স্ট্র্র্যাটেজি তৈরি করেছে। কিন্তু সে স্থান থেকে রাশিয়া বেরিয়ে আসতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। সর্বতোভাবেই মনে হচ্ছে যে নরম শক্তি দিয়ে রাশিয়ার বন্দুক থামানো যাবে না। শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার বন্দুক থামাতে হলে এর বিরুদ্ধে বন্দুকই ব্যবহার করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর