রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

দেড় বছরে জেট ফুয়েলের দাম ১১৭ শতাংশ বেড়েছে

প্রতিদিন ডেস্ক

দেশে গত দেড় বছরে উড়োজাহাজের জ্বালানি জেট ফুয়েলের দাম ১১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন রুটের ফ্লাইটের টিকিটের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শঙ্কিত দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে জেট ফুয়েলের দাম বাড়তে শুরু করেছিল। ওই মাসে প্রতি লিটারের দাম ছিল ৪৬ টাকা। সর্বশেষ ৬ এপ্রিল লিটারে ১৩ টাকা বেড়ে দাম পৌঁছেছে ১০০ টাকায়। অর্থাৎ ১৮ মাসের ব্যবধানে দেশে জেট ফুয়েলের দাম ৫৪ টাকা বা ১১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তথ্য বলছে, গত ১৮ মাসে ১৪ বার জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ সময়ে ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক দফায় বেড়েছে ১৫ টাকা করে।

এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও বেড়ে যাওয়ায় দেশেও ফের দাম বাড়ানোর আলোচনা চলছে।

দফায় দফায় জেট ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম। তিনি একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন না হয় বুঝলাম যুদ্ধের কারণে জেট ফুয়েলের দাম বেড়েছে। কিন্তু দেশে ১৮ মাস ধরে ননস্টপ জেট ফুয়েলের দাম বেড়েছে। কভিড মহামারীর সময় যখন সবকিছু বন্ধ, তখনো জেট ফুয়েলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ানো হয়েছে। গত সপ্তাহে ১৩ টাকা বেড়েছে, ওটাকে আমি হিসাবে ধরছি না। আমি ১৮ মাসের হিসাব ধরে কথা বলছি। ৫৪ টাকা দাম বেড়েছে এই সময়ে। এটা কতটুকু যৌক্তিক আমি জানি না। এখন বলা হচ্ছে, যুদ্ধের কারণে দাম বেড়েছে জেট ফুয়েলের, তাহলে কভিডকালে কেন দাম বাড়ল?’

কভিডের ধকল কাটিয়ে ওঠার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার যখন এভিয়েশন খাতে ভর্তুকি দিয়ে গেছে, তখনো দেশে জেট ফুয়েলের দাম বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন কামরুল।

তিনি বলেন, ‘কভিড-পরবর্তী ধকল কাটিয়ে এভিয়েশন খাতটা এখন ঘুরে দাঁড়ানোর একটা সুযোগ পেয়েছে। এ সময় এই খাতের পাশে থাকতে হবে। না হলে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমরা পেরে উঠব না। দেখা যাবে দিন শেষে বাজারটা রয়ে গেছে, কিন্তু সেটা চলে যাবে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর দখলে।’

উড়োজাহাজ চালাতে যে খরচ, তার একটি বড় অংশ হয় জ্বালানির পেছনে। ফলে জেট ফুয়েলের দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই টিকিটের দাম বাড়বে। আর ভাড়া বেড়ে গেলে দেশের ভিতরে বিমানে ওড়ার যাত্রী কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন কামরুল, ‘টিকে থাকতে হলে তো আমাকে ভাড়ার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে হবে। মোট কথা ভাড়া বেড়ে গেলে যাত্রী কমবে, এয়ারলাইনসের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ এভিয়েশন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে, কভিডের আগেও ঢাকা থেকে যশোরের ভাড়া ছিল ৩ হাজার টাকার আশপাশে। ৩ হাজার টাকায় ঢাকা-সৈয়দপুর টিকিটও পাওয়া যেত। কিন্তু এখন ৪ হাজারের নিচে কোনো গন্তব্যের টিকিট নেই ইউএস বাংলায়।

সর্বশেষ খবর