বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

দনবাস দখলে রাশিয়ার তুমুল আক্রমণ, ছাড়বে না ইউক্রেন

প্রতিদিন ডেস্ক

দনবাস দখলে রাশিয়ার তুমুল আক্রমণ, ছাড়বে না ইউক্রেন

রাশিয়া দনবাস অঞ্চল দখলে তুমুল আক্রমণ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানকার শহরগুলোয় ব্যাপক রকেট হামলা শুরু হয়েছে জানিয়ে এক ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা এখন নিশ্চিত করছি রুশ বাহিনী দনবাস অঞ্চল দখলের জন্য লড়াই শুরু করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে তারা এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে এখানে যত জন রুশ সেনা নিয়ে আসা হোক না কেন আমরা লড়াই করব। আত্মরক্ষার এ লড়াই চালিয়ে যাব আমরা।’ ইউক্রেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওলেক্সি দানিলভ জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে ইউক্রেন সেনাদের সম্মুখভাগের সঙ্গে লড়াই শুরু করেছে রুশ সেনারা।

এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় উদ্যাপনে ৯ মে মস্কোয় কুচকাওয়াজ করবে রাশিয়া। তার আগে রুশ বাহিনী দনবাসের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে কি না তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে আলোচনা চলছে। বিশ্লেষক জ্যাক ওয়াটলিংয়ের মতে এ সময়ের মধ্যে দনবাসের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া রাশিয়ার পক্ষে সম্ভব। তবে সে কথা একেবারে  নিশ্চিত করে বলার মতো পর্যায় এখন পর্যন্ত আসেনি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার ওপর আরোপ করা পশ্চিমাদের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ব্যর্থ হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে উল্টো পশ্চিমাদের অর্থনীতি খারাপ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। বিবিসির খবরে বলা হয়, রাজধানী কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হয়ে দনবাস দখলে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে রাশিয়া, এটি আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। যুদ্ধের প্রথমে রাশিয়ার উদ্দেশ্য ছিল প্রধান ইউক্রেনীয় শহরগুলো দখল করে ক্ষমতাসীন সরকারকে হটিয়ে দেওয়া। কিন্তু ইউক্রেনীয়দের কঠিন প্রতিরোধের মুখে সে আশা ত্যাগ করতে হয়েছে মস্কোকে। এখন তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য দনবাস অঞ্চলে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়া দুটি দেশের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা। প্রথম থেকেই এ যুদ্ধকে ইউক্রেনকে নাৎসিমুক্ত করার অভিযান হিসেবে দেখাতে চেয়েছে রাশিয়া। সোমবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন টার্গেটে দিনভর হামলা চালায় রুশ সেনারা। এতে অন্তত আট বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। লুহানস্কর গভর্নর এ অঞ্চলকে ‘জাহান্নাম’ বলে বর্ণনা করেছেন।

পূর্ব ইউক্রেনের একাধিক শহরে একটানা হামলা চলছে। দ্রুতই এগুলোর পতন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রুশ বাহিনী জানিয়েছে, রবিবার রাতে ইউক্রেনের শত শত সামরিক অবস্থান টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে তারা। খারকিভ, জাপোরিঝঝিয়া, দনেৎস্ক ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে এসব হামলা চলছে।

রুশ বাহিনীর বড় ধরনের হামলার শঙ্কা থেকে এর আগেই দনবাসের মানুষজনকে ইউক্রেনের পশ্চিমাংশে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশটির কর্তৃপক্ষ। দনবাসের নিয়ন্ত্রণ মস্কোর জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর নিয়ন্ত্রণ নিলে ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে করিডর তৈরি হবে। মস্কো গত মাসে দাবি করেছিল যে লুহানস্কর ৯৩ ও দনেৎস্কর ৫৪ শতাংশ এখন তাদের দখলে। তবে দনবাস দখল রাশিয়ার জন্য খুব সহজও হবে না। ধারণা করা হয়, সেখানে প্রায় ৫০ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা রয়েছে। তারা বছরের পর বছর ধরে রুশপন্থি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়ছে। দনবাস দখলের যুদ্ধকে রুশ আগ্রাসনের দ্বিতীয় ধাপ বলে আখ্যায়িত করেছেন জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক। তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন, তারা অনেক শক্তিশালী।’

সর্বশেষ খবর