শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

সরাইলে পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলার পর পুলিশ হেফাজতে নজির আহমেদ (৩৫) নামে এক ওষুধ ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সরাইল উপজেলা সদরের নিজ সরাইল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতেই নিহতের বড় ভাই মো. জাফর আহমেদ বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ রাতেই জুম্মন নামে মামলার এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নজির আহমেদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

মামলার এজাহারে বাদী জাফর আহমেদ অভিযোগ করেন প্রতিপক্ষ মমতাজ বেগম ও জুম্মনের সঙ্গে একটি বাড়ি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ

 চলে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা-মোকদ্দমাও চলমান। মমতাজ বেগম ও জুম্মনকে ইন্ধন দেন স্থানীয় মেম্বার মোসাহেদ উল্লাহ। বিষয়টি মীমাংসা করতে সামাজিকভাবে এবং থানায় একাধিক সালিশ সভা  হলেও এর কোনো নিষ্পত্তি করা যায়নি। পূর্ব বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার মামলার আসামিরা নজির আহমেদকে একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দেন। রাত ৮টার দিকে নজির আহমেদকে হত্যার উদ্দেশে আসামি জুম্মন নজিরের ঘরে প্রবেশ করলে নজির তাকে জাপটে ধরে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় তার বাড়ি-ঘরের লোকজন এগিয়ে আসে। একই সময় প্রতিপক্ষের লোকজনও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে এসে তার ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজির আহমেদ ও জুম্মনকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় যাওয়ার পর নজির অসুস্থ বোধ করলে তাৎক্ষণিক স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নজিরকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই নজির আহমেদের বড় ভাই মো. জাফর আহমেদ বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য  ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোমান মিয়া জানান, হাসপাতালে আনার আগেই নজির আহমেদের মৃত্যু হয়েছে। মামলার বাদী জাফর আহমেদ বলেন, পুলিশ নিজেরাই এজাহার লিখে  আমাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের ধারণা পুলিশের নির্যাতনেই আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, নজির আহমেদের ওপর প্রতিপক্ষের লোকেরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করলে সে অসুস্থ  হয়ে পড়ে। আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠানোর পর তার মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তার ভাই জাফর আহমেদ বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে রাতেই মামলা করেছেন। পুলিশ রাতেই মামলার আসামি জুম্মনকে গ্রেফতার করেছে। তিনি বলেন, এজাহার বাদীকে পাঠ করিয়েই গ্রহণ করা হয়েছে। থানায় নয়, হাসপাতালে নেওয়ার পর নজির আহমেদ মারা গেছেন।

সর্বশেষ খবর