বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টায় যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

শিক্ষাবিদ, লেখক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলায় দুজনকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন প্রধান অভিযুক্তের মা, বাবা, ভাই ও মামা। গতকাল সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি মুমিনুর রহমান টিটু জানান, আদালত মামলার প্রধান আসামি অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী ফয়জুল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ফয়জুলের বন্ধু মো. সোহাগ মিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এ ছাড়া মামলার বাকি চার আসামি ফয়জুল হাসানের বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসানকে খালাস প্রদান করেছে আদালত।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন। তবে আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্তরা ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মোতাহের আলী। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান তিনি। ২২ মার্চ উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেট বিভাগীয় সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছিলেন। ধার্য তারিখে গতকাল আদালত রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে সব আসামি উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মমিনুর রহমান টিটু জানান, গত ১০ মার্চ চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এই মামলায় মোট ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরপর ২১ ও ২২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এই মামলার ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজন জামিনে থাকলেও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে জনপ্রিয় লেখক ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা হয়। ফয়জুল হাসান নামের এক মাদ্রাসাছাত্র ছুরি দিয়ে জাফর ইকবালের মাথা ও ঘাড়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষকরা হামলাকারী ফয়জুলকে হাতেনাতে ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন। জাফর ইকবালকে আহত অবস্থায় প্রথমে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শাবি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে পরদিন মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর