বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রেসিডেন্টকেও অভিশংসনের প্রস্তুতি

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রেসিডেন্টকেও অভিশংসনের প্রস্তুতি

‘সংবিধান লঙ্ঘন’ অভিযোগে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে অভিশংসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির নতুন সরকার। জোটের শরিকদের সম্মতি নিয়ে ঈদের পর জাতীয় পরিষদের স্পিকারের কাছে ‘অকাট্য ঘটনা’ উত্থাপন করা হবে বলে ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতা মোহসিন শাহনেওয়াজ রানঝা এসব কথা জানিয়েছেন। তবে অভিশংসনের জন্য প্রয়োজনীয় ভোট নিশ্চিত করা নিয়ে সংশয় রয়েছে। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) জাতীয় পরিষদের সদস্য মোহসিন শাহনেওয়াজ রানঝা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের সিদ্ধান্তের বিষয়টি দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অন্তত দুটি ঘটনায় সংবিধান লঙ্ঘনের নোটিস টেবিলে উত্থাপনের মাধ্যমে অভিশংসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবে সরকার। রানঝা বলেন, দুবার ‘অসাংবিধানিক’ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আলভিকে জবাবদিহি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। সিদ্ধান্ত দুটি হলো ১০ম ন্যাশনাল ফাইন্যান্স কমিশন (এনএফসি) গঠনে নোটিস জারি এবং সংসদীয় কমিটিকে পাশ কাটিয়ে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনে (ইসিপি) দুজন সদস্য নিয়োগ। এই পিএমএল-এন আইনপ্রণেতা বলেন, দেশের কয়েকটি হাই কোর্ট প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে সংবিধান লঙ্ঘন বলে ঘোষণা দিয়েছে। দুটি রুলিংয়ের বিষয়ে পরবর্তী সময় কোনো আপিল না করায় এ রায়ই চূড়ান্ত বলে প্রতীয়মান হয়েছে। রানঝা বলেন, ‘অতীতে সংবিধান লঙ্ঘন করেও লোকজন পার পেয়ে যেত। তবে এবার আমরা নিশ্চিত করতে চাই, এমনটা আর ঘটবে না।’ সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্বরত বিচারপতি কাজী ফায়েজ ইসার বিরুদ্ধে প্রেসিডেনশিয়াল রেফারেন্স ব্যবহার ভুল ছিল বলে স্বীকার করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সর্বোচ্চ আদালত বিষয়টি অবৈধ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দিয়েছিল। অভিশংসন নোটিসে এ বিষয়টিও যুক্ত করা হতে পারে বলেও রাজনীতি ও আইনজ্ঞরা বলছেন। রানঝা বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৭ অনুযায়ী, শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতার কারণে প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা যাবে অথবা সংবিধান লঙ্ঘন ও চরম অসদাচরণের কারণে অভিশংসন করা যাবে। তিনি বলেন, ‘তাঁর (প্রেসিডেন্ট আলভি) সংবিধান লঙ্ঘনের ইতিহাস আছে। তাই আমরা তার অভিশংসন চাইব।’ তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের দুটি সিদ্ধান্তই ছিল আইন ও সংবিধানবিরোধী।

তবে দৃশ্যত অভিশংসন প্রস্তাবের জন্য সরকারের প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট নেই। জাতীয় পরিষদে ক্ষমতাসীন জোটের ১৭৪টি ভোট আছে। আর সিনেটে প্রায় ৭০টি। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ভিন্নমতাবলম্বী ৩৩ জন মিলিয়ে ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭৭টি। কিন্তু ৪২২ আসনের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার জন্য প্রয়োজনীয় ২৯৫টি ভোটের চেয়ে তা এখনো ১৮টি কম।

জাতীয় পরিষদে আনা বিরোধী জোটের অনাস্থা ভোটে হেরে ৯ এপ্রিল বিদায় নেয় ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপর জাতীয় সরকারের আদলে নতুন সরকার গঠন করে বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী হন পিএমএল-এনের সভাপতি শাহবাজ শরিফ। প্রেসিডেন্ট আলভিকে ইমরান খানের অনুগত মনে করা হয়। তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজকে শপথ পড়ানো থেকেও বিরত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতার ভার সামলাতে পারবে না পাকিস্তান মন্তব্য শাহবাজ শরিফের : ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতার ভার সামলাতে পারবে না পাকিস্তান’ গতকাল এ মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি জানিয়েছেন, এই ‘বিশ্ব সুপার পাওয়ারের’ সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়তে হবে। মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শাহবাজ জানিয়েছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করা প্রয়োজন। এ সময় তিনি পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের আনা মার্কিন ষড়যন্ত্রের অভিযোগও নাকচ করেছেন। শাহবাজ বলেছেন, নিরাপত্তা কমিটির বিবৃতিতে পরিষ্কার যে কোনো বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল না। যদিও নিজের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য বরাবরই বিদেশি বিশেষ করে মার্কিন ষড়যন্ত্রের কথা বলে আসছেন ইমরান খান।

সর্বশেষ খবর